ঢাকা , শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
গ্রিন সিলেট ট্রাভেলসের আয়োজনে বাংলাদেশে পর্তুগাল দূতাবাস/কনসুলেট চেয়ে খোলা চিঠি স্বৈরাচার সরকার পতনের পর যুক্তরাজ্যে ফিরছেন সিলেট আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপি পর্তুগাল শাখার উদ্যোগে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত! বন্যার্ত মানুষের ত্রান তহবিলের জন্যে ৬ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘোষণা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বেজা শাখার কর্মি সম্মেলন অনুষ্ঠিত বিমানের নতুন চেয়ারম্যান কুলাউড়ার আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও ২৪ কোটা আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা দোয়া মাহফিল পর্তুগালে রাজনগর প্রবাসী ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আত্মপ্রকাশ পর্তুগাল বিএনপি’র আয়োজনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্বরণে দোয়া ও মাহফিল সম্পন্ন বিমূর্ত সব মুর্হুতরা, আমার মা’য়ের সাথের শেষ শনিবার – শাহারুল কিবরিয়া বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনে হত্যার প্রতিবাদে পর্তুগালে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশী প্রবাসীরা

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ভূমিকা রাখার আহ্বান

দেশদিগন্ত :
  • আপডেটের সময় : ১২:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৭
  • / ১৩৯১ টাইম ভিউ

রোহিঙ্গা সঙ্কট ও বাংলাদেশের মানবিক সহযোগিতা বিষয়ে জাতিসংঘ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত এক ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে স্থায়ী ও কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনন্য সাহসিকতা ও দৃঢ়তা প্রদর্শন করেছেন। অসহায় রোহিঙ্গাদের জন্য তিনি দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা ও জরুরি ত্রাণবিষয়ক সমন্বয়কারী এবং জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক লোকক্ জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহের জন্য এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেন। স্বাগত বক্তব্যে মার্ক লোকক্ কক্সবাজারস্থ রোহিঙ্গা ক্যাম্প সরেজমিনে পরিদর্শনকালে তার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
লোকক জোরপূর্বক বাস্তুচ্যত এসব রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদেরকে উদারভাবে আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান। উদ্বাস্তু ক্যাম্পসমূহে জাতিসংঘ ও এর সহযোগী সংস্থাগুলো গৃহীত বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত ও অন্যান্য সহায়তা প্রদানের সংক্ষিপ্তসারও তুলে ধরেন লোকক্। তিনি এক্ষেত্রে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা পরিকল্পনার কথা, রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘ প্রদত্ত মানবিক সহায়তা, এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় হতে প্রাপ্ত সহায়তার কথা সদস্যরাষ্ট্রসমূহকে অবহিত করেন এবং তিনি এ প্রসঙ্গে ২৩ অক্টোবর জেনেভাতে অনুষ্ঠেয় প্লেজিং কনফারেন্স-এর কথা উল্লেখ করে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাদবাকি সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিকট আহ্বান জানান।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তার বক্তব্যে নিজের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের ভিত্তিতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অমানবিক অবস্থার বর্ণনা তুলে ধরেন। তিনি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে স্থায়ী ও কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। স্পিকার বলেন, আমরা এই সমস্যার জরুরি সমাধান চাই, যাতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নিরাপদভাবে এবং সম্মানের সঙ্গে তাদের ঘরে ফিরতে এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও অর্থপূর্ণ জীবন কাটাতে পারে। এই সংকটের শেকড় মিয়ানমারে এবং এর সমাধান মিয়ানমারেই নিহিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে এ সমস্যা সমাধান সম্ভব।
ব্রিফিং অনুষ্ঠানে ইউএনএইচসিআর, আইওএম, ইউনিসেফ, ডব্লিউএইচও, রেডক্রস এন্ড রেডক্রিসেন্ট এর প্রতিনিধিগণ ছাড়াও কুয়েত, তুরস্ক, সৌদিআরব, সুইডেন, যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইজারল্যান্ড, মিয়ানমার, বাংলাদেশ ও ইইউ’র রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিগণ বক্তব্য দেন।
এদিকে সন্ধ্যায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব ও অ্যাডভাইজরি কমিটি অন রাখাইন স্টেট-এর চেয়ারম্যান কফি আনানের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠককালে তিনি একটি সুদূরপ্রসারী ও গঠনমূলক প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য কফি আনানকে ধন্যবাদ জানান।
কফি আনান চলমান পরিস্থিতিতে মানবিক ভূমিকা রাখার জন্য বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার ব্যক্তিগত শুভেচ্ছা জ্ঞাপনের জন্য স্পীকারকে অনুরোধ করেন। তিনি মিয়ানমারের অব্যাহত অনুপ্রবেশের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং এখন পর্যন্ত সঙ্কট চলমান থাকার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে গুরুত্বারোপ করেন।
ড. আনান অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ এবং রাখাইন প্রদেশের উপদ্রুত এলাকাগুলোতে জাতিসংঘ ও মানবিক সহায়তা সংস্থাসমূহ এবং গণমাধ্যমের অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার উপর জোর দেন। তিনি মনে করেন এসব পদক্ষেপের আশু বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাখাইন প্রদেশে এখন পর্যন্ত অবস্থানরত দুর্গত মানুষের মধ্যে আস্থার মনোভাব তৈরি করা সম্ভব।
স্পিকার ড. আনানকে এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার ধারণা ও সুপারিশসমূহ তুলে ধরার জন্য অনুরোধ জানান। তিনি ড. আনানকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণের আলোকে দ্রুত সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের অনুরোধ জানান। ড. আনান চলমান মানবিক বিপর্যয় কালে তার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

পোস্ট শেয়ার করুন

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ভূমিকা রাখার আহ্বান

আপডেটের সময় : ১২:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৭

রোহিঙ্গা সঙ্কট ও বাংলাদেশের মানবিক সহযোগিতা বিষয়ে জাতিসংঘ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত এক ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে স্থায়ী ও কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনন্য সাহসিকতা ও দৃঢ়তা প্রদর্শন করেছেন। অসহায় রোহিঙ্গাদের জন্য তিনি দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা ও জরুরি ত্রাণবিষয়ক সমন্বয়কারী এবং জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক লোকক্ জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহের জন্য এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেন। স্বাগত বক্তব্যে মার্ক লোকক্ কক্সবাজারস্থ রোহিঙ্গা ক্যাম্প সরেজমিনে পরিদর্শনকালে তার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
লোকক জোরপূর্বক বাস্তুচ্যত এসব রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদেরকে উদারভাবে আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান। উদ্বাস্তু ক্যাম্পসমূহে জাতিসংঘ ও এর সহযোগী সংস্থাগুলো গৃহীত বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত ও অন্যান্য সহায়তা প্রদানের সংক্ষিপ্তসারও তুলে ধরেন লোকক্। তিনি এক্ষেত্রে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা পরিকল্পনার কথা, রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘ প্রদত্ত মানবিক সহায়তা, এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় হতে প্রাপ্ত সহায়তার কথা সদস্যরাষ্ট্রসমূহকে অবহিত করেন এবং তিনি এ প্রসঙ্গে ২৩ অক্টোবর জেনেভাতে অনুষ্ঠেয় প্লেজিং কনফারেন্স-এর কথা উল্লেখ করে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাদবাকি সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিকট আহ্বান জানান।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তার বক্তব্যে নিজের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের ভিত্তিতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অমানবিক অবস্থার বর্ণনা তুলে ধরেন। তিনি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে স্থায়ী ও কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। স্পিকার বলেন, আমরা এই সমস্যার জরুরি সমাধান চাই, যাতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নিরাপদভাবে এবং সম্মানের সঙ্গে তাদের ঘরে ফিরতে এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও অর্থপূর্ণ জীবন কাটাতে পারে। এই সংকটের শেকড় মিয়ানমারে এবং এর সমাধান মিয়ানমারেই নিহিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে এ সমস্যা সমাধান সম্ভব।
ব্রিফিং অনুষ্ঠানে ইউএনএইচসিআর, আইওএম, ইউনিসেফ, ডব্লিউএইচও, রেডক্রস এন্ড রেডক্রিসেন্ট এর প্রতিনিধিগণ ছাড়াও কুয়েত, তুরস্ক, সৌদিআরব, সুইডেন, যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইজারল্যান্ড, মিয়ানমার, বাংলাদেশ ও ইইউ’র রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিগণ বক্তব্য দেন।
এদিকে সন্ধ্যায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব ও অ্যাডভাইজরি কমিটি অন রাখাইন স্টেট-এর চেয়ারম্যান কফি আনানের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠককালে তিনি একটি সুদূরপ্রসারী ও গঠনমূলক প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য কফি আনানকে ধন্যবাদ জানান।
কফি আনান চলমান পরিস্থিতিতে মানবিক ভূমিকা রাখার জন্য বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার ব্যক্তিগত শুভেচ্ছা জ্ঞাপনের জন্য স্পীকারকে অনুরোধ করেন। তিনি মিয়ানমারের অব্যাহত অনুপ্রবেশের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং এখন পর্যন্ত সঙ্কট চলমান থাকার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে গুরুত্বারোপ করেন।
ড. আনান অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ এবং রাখাইন প্রদেশের উপদ্রুত এলাকাগুলোতে জাতিসংঘ ও মানবিক সহায়তা সংস্থাসমূহ এবং গণমাধ্যমের অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার উপর জোর দেন। তিনি মনে করেন এসব পদক্ষেপের আশু বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাখাইন প্রদেশে এখন পর্যন্ত অবস্থানরত দুর্গত মানুষের মধ্যে আস্থার মনোভাব তৈরি করা সম্ভব।
স্পিকার ড. আনানকে এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার ধারণা ও সুপারিশসমূহ তুলে ধরার জন্য অনুরোধ জানান। তিনি ড. আনানকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণের আলোকে দ্রুত সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের অনুরোধ জানান। ড. আনান চলমান মানবিক বিপর্যয় কালে তার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।