ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনে হত্যার প্রতিবাদে পর্তুগালে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশী প্রবাসীরা প্রিয়জনদের মানসিক রোগ যদি আপনজন বুঝতে না পারেন আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা ও অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা করেছে পর্তুগাল আওয়ামীলীগ যেকোনো প্রচেষ্টা এককভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়: দুদক সচিব শ্রীমঙ্গলে দুটি চোরাই মোটরসাইকেল সহ মিল্টন কুমার আটক পর্তুগালের অভিবাসন আইনে ব্যাপক পরিবর্তন পর্তুগাল বিএনপি আহবায়ক কমিটির জুমে জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয় এমপি আনোয়ারুল আজিমকে হত্যার ঘটনায় আটক তিনজন , এতে বাংলাদেশী মানুষ জড়িত:স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকাস্থ ইরান দুতাবাসে রাইসির শোক বইয়ে মির্জা ফখরুলের স্বাক্ষর

মৌলভীবাজার বিএনপি কোন্দল মিটেছে কর্মসূচি ইনডোরে

 ইমাদ উদ দ্দীনঃ
  • আপডেটের সময় : ১২:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • / ৩৭৬ টাইম ভিউ

 ইমাদ উদ দ্দীনঃ ইনডোর না আউটডোর। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনে নিবেদিতপ্রাণ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা জেলা নেতৃবৃন্দের কাছে এখন এমন প্রশ্নই রাখেন। জানতে চান কর্মসূচি পালনের ধরনও। কারণ দীর্ঘদিন থেকে নানা কারণে ইনডোর বা ব্যানার সর্বস্ব কর্মসূচি পালনই যেন মৌলভীবাজার বিএনপি’র রুটিন ওয়ার্ক। দায়সারা গোছের দলীয় কর্মসূচি পালন করা নিয়ে নিজ দলের নেতাকর্মীর বাইরে অন্যদেরও আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। তারপরও এখন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপিতে লেগেছে পরিবর্তনের হাওয়া। শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে জেলা নেতৃবৃন্দের। এসেছে আমূল পরিবর্তনও। দীর্ঘদিন পর এখন ঐক্যবদ্ধ মৌলভীবাজার বিএনপি। গেল জাতীয় নির্বাচনের আগে থেকেই তাদের এই পরিবর্তনভেদাভেদ ভুলে তারা বসছেন একটেবিলে। দলীয় ঘরোয়া বৈঠকসহ নানা কর্মসূচিও পালন করছেন একসঙ্গে। তবে জেলা শহরে দীর্ঘদিন থেকে রাজপথে সক্রিয় মিছিল মিটিংয়ে দেখা যাচ্ছে না তাদের। ব্যানার সর্বস্ব ঝটিকা মিছিলই যেন কোনো রকম জিয়ে রেখেছে তাদের সাংগঠনিক কর্মক্রম। এর প্রভাব পড়েছে জেলার ৭ উপজেলার ৪টি সংসদীয় আসন এলাকায়।

এ নিয়ে প্রতিনিয়তই দলের নিবেদিতপ্রাণ কর্মী, শোভাকাঙ্ক্ষী ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের তির্যক কথার অন্তনেই। এর নেপথ্যে কারণ- হিসেবে নানা অজুহাত তুলে ধরছেন জেলা বিএনপির নেতারা। তারা বলছেন, প্রেক্ষাপট এখনো বদলায়নি। মামলা হামলার খড়গও ঝুলন্ত। নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় জেরবার, সর্বস্বান্ত। সভা, সমাবেশ কিংবা রাজপথে মিছিল-মিটিং বের হলেই পুলিশি হামলা মামলা ও সরকার দলের নেতাকর্মীদের নানা উস্কানি। তারপরও অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে নিজেদের বদলানোর চেষ্টা তাদের। তারা জানালেন আগের যে কোনো সময়ের চাইতে আমরা এখন ঐক্যবদ্ধ। অনেকটাই সুসংগঠিত। জেলা নেতৃবৃন্দের ঐক্যবদ্ধতায় উপজেলাগুলোতেও ঐক্যের সুর। এতে দলের সাংগঠনিক কাঠামোর ভিত মজবুত হয়েছে। এখন সময় হলেই রাজপথের আন্দোলনে একসঙ্গে দেখবেন আমাদের। গতকাল মানবজমিন-এর সঙ্গে আলাপে এমনটিই জানালেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির প্রথমসারির কয়েকজন নেতা। দীর্ঘদিন থেকে বিভক্ত মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি এখন ঐক্যবদ্ধ। চলতি বছরের ২রা মে আনুষ্ঠানিকভাবে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে নবগঠিত জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ একমঞ্চে বসে প্রথম সভা করেন। বক্তব্যও রাখেন।

ওই সভায় নেতৃবৃন্দের রাজপথে ঐক্যবদ্ধভাবে নানা কর্মসূচি পালনের প্রতিশ্রুতিতে উজ্জীবিত হন দলীয় নেতাকর্মীরা। ওইদিন থেকেই সাংগঠনিক কাজে ঝিমিয়ে পড়া নেতাকর্মীদের মাঝে ফিরে প্রাণচাঞ্চল্য। এর আগে কয়েক বছর থেকে এমন দৃশ্য ছিল অবিশ্বাস্য। মৌলভীবাজার পৌর জনমিলন কেন্দ্রে নবগঠিত জেলা কমিটির ওই দিনের প্রথম সভাটি বিএনপি ঘরানার নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিল ‘টক অব দ্য জেলা’। প্রথম সভার ক’দিন আগে থেকেই দলীয় নেতাকর্মীদের মুখে মুখে ছিল নবগঠিত জেলা কমিটি ও প্রথম সভা। বাদ জাননি অন্যরাও। সমমনা ২০ দলীয় জোট ও অন্যান্য দলের নেতাকর্মীদের মুখেও ছিল এ নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনা। তবে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়াকে সবাই সাধুবাদ জানিয়েছিলেন। জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে বয়ে চলা গ্রুপিং দ্বন্দ্ব কিছুতেই থামছিল না। দলের দুর্দিনে কেন্দ্রীয় নানা কর্মসূচি পালন হতো পৃথক পৃথকভাবে।

এ নিয়ে দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অন্তর্জ্বালা ও ক্ষোভের শেষ ছিল না। জেলা কমিটির ওই দ্বন্দ্ব প্রভাবিত করেছিল উপজেলা পর্যায়ে সহযোগী সংগঠনগুলোতেও। জানা যায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কিছুদিন আগে থেকেই কেন্দ্রীয় কমিটির হস্তক্ষেপে দ্বন্দ্ব নিরসনে নমনীয় হতে থাকেন চলমান একাধিক গ্রুপিং দ্বন্দ্বে থাকা নেতৃবৃন্দ। গেল জাতীয় নির্বাচনে তারা পুরোপুরি ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামেন। এর বাস্তবতা হলো ওই নির্বাচনে নানা প্রতিকূলতা ও অভিযোগের পরও এ জেলার ৪টি সংসদীয় আসনেই সম্মানজনক ভোট পাওয়া। এমনকি একটি আসনে ধানের শীষ প্রতীক জয়লাভও করে। নির্বাচনের পর অপূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্র অনুমোদন দেয়। এতে বিবদমান গ্রুপের শীর্ষ নেতারা স্থান পান। ওই কমিটি ঘোষণার পর প্রথম দিকে দু’একজন ছাড়া সকলেই নবগঠিত কমিটিকে স্বাগত জানান। এরপর পদপদবি নিয়ে যারা মান-অভিমানে ছিলেন। পদত্যাগপত্রও দিয়েছিলেন। তাদের অনেকটাই ম্যানেজ করে দলে ফিরানো হয়। এরপর থেকে ভেদাভেদ ভুলে সুশৃঙ্খলিত ভাবেই চলছে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের কার্যক্রম। সম্প্রতি মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের শহীদ জিয়া অডিটরিয়ামের নামফলক ছাত্রলীগ কর্তৃক ভেঙে ফেলা নিয়ে মৌলভীবাজার প্রেস ক্লাবে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান। সংবাদ সম্মেলন শেষে তারা প্রেস ক্লাবের পাশেই একটি কমিউনিটি সেন্টারে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিও পালন করেন। ওইদিন পুলিশি বাধায় অবশ্য রাজপথে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‌্যালি বা মিছিল করতে পারেননি। এমন অভিযোগ ছিল তাদের। এছাড়া ৫ই সেপ্টেম্বর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী মরহুম এম সাইফুর রহমানের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী একসঙ্গেই আনুষ্ঠানিকভাবেই পালন করে জেলা বিএনপি। নেতাকর্মীরা জানান, এমন দৃশ্য গেল কয়েক বছরের মধ্যে ছিল না মৌলভীবাজার জেলা বিএনপিতে।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ভিপি মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বকশী মিছবাহ-উর রহমান মানবজমিনকে বলেন, আগের চাইতে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি এখন সুসংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ। অতীতের ভেদাভেদের কথা তুলে ধরলে তারা জানান, বড় দল থাকায় নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও মতানৈক্য কিছুটা থাকতেই পারে- এটা স্বাভাবিক। আমাদের মধ্যে সেই ভুলবোঝাবুঝির অবসান হয়েছে। জেলা সভাপতি ও সাবেক এমপি এম নাসের রহমানসহ জেলা নেতৃবৃন্দের ঐকমত্যের ভিত্তিতে উপজেলা ও পৌরকমিটিসহ বিভিন্ন শাখায় নতুন কমিটি হচ্ছে। এতো হামলা মামলার পরও দলের জেলা, উপজেলা ও পৌরকমিটির নেতাকর্মীরা এখন অনেকটাই উজ্জীবিত। রাজপথের কর্মসূচি পালনের বিষয়ে তারা বলেন, মিছিল, মিটিং, র‌্যালি ও সমাবেশ করতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের অনুমতি নেয়ার জন্য বলেন। কিন্তু অনুমতি নিতে গেলে পাওয়া যায় না। আর রাজপথে বের হলেই আমাদের নেতাকর্মীর ওপর নেমে আসে হামলা-মামলার খড়গ। তবে খুব শিগগিরই আমরা আন্দোলনের নতুনত্ব নিয়ে মাঠে সক্রিয় থাকবো।

পোস্ট শেয়ার করুন

মৌলভীবাজার বিএনপি কোন্দল মিটেছে কর্মসূচি ইনডোরে

আপডেটের সময় : ১২:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 ইমাদ উদ দ্দীনঃ ইনডোর না আউটডোর। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনে নিবেদিতপ্রাণ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা জেলা নেতৃবৃন্দের কাছে এখন এমন প্রশ্নই রাখেন। জানতে চান কর্মসূচি পালনের ধরনও। কারণ দীর্ঘদিন থেকে নানা কারণে ইনডোর বা ব্যানার সর্বস্ব কর্মসূচি পালনই যেন মৌলভীবাজার বিএনপি’র রুটিন ওয়ার্ক। দায়সারা গোছের দলীয় কর্মসূচি পালন করা নিয়ে নিজ দলের নেতাকর্মীর বাইরে অন্যদেরও আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। তারপরও এখন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপিতে লেগেছে পরিবর্তনের হাওয়া। শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে জেলা নেতৃবৃন্দের। এসেছে আমূল পরিবর্তনও। দীর্ঘদিন পর এখন ঐক্যবদ্ধ মৌলভীবাজার বিএনপি। গেল জাতীয় নির্বাচনের আগে থেকেই তাদের এই পরিবর্তনভেদাভেদ ভুলে তারা বসছেন একটেবিলে। দলীয় ঘরোয়া বৈঠকসহ নানা কর্মসূচিও পালন করছেন একসঙ্গে। তবে জেলা শহরে দীর্ঘদিন থেকে রাজপথে সক্রিয় মিছিল মিটিংয়ে দেখা যাচ্ছে না তাদের। ব্যানার সর্বস্ব ঝটিকা মিছিলই যেন কোনো রকম জিয়ে রেখেছে তাদের সাংগঠনিক কর্মক্রম। এর প্রভাব পড়েছে জেলার ৭ উপজেলার ৪টি সংসদীয় আসন এলাকায়।

এ নিয়ে প্রতিনিয়তই দলের নিবেদিতপ্রাণ কর্মী, শোভাকাঙ্ক্ষী ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের তির্যক কথার অন্তনেই। এর নেপথ্যে কারণ- হিসেবে নানা অজুহাত তুলে ধরছেন জেলা বিএনপির নেতারা। তারা বলছেন, প্রেক্ষাপট এখনো বদলায়নি। মামলা হামলার খড়গও ঝুলন্ত। নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় জেরবার, সর্বস্বান্ত। সভা, সমাবেশ কিংবা রাজপথে মিছিল-মিটিং বের হলেই পুলিশি হামলা মামলা ও সরকার দলের নেতাকর্মীদের নানা উস্কানি। তারপরও অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে নিজেদের বদলানোর চেষ্টা তাদের। তারা জানালেন আগের যে কোনো সময়ের চাইতে আমরা এখন ঐক্যবদ্ধ। অনেকটাই সুসংগঠিত। জেলা নেতৃবৃন্দের ঐক্যবদ্ধতায় উপজেলাগুলোতেও ঐক্যের সুর। এতে দলের সাংগঠনিক কাঠামোর ভিত মজবুত হয়েছে। এখন সময় হলেই রাজপথের আন্দোলনে একসঙ্গে দেখবেন আমাদের। গতকাল মানবজমিন-এর সঙ্গে আলাপে এমনটিই জানালেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির প্রথমসারির কয়েকজন নেতা। দীর্ঘদিন থেকে বিভক্ত মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি এখন ঐক্যবদ্ধ। চলতি বছরের ২রা মে আনুষ্ঠানিকভাবে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে নবগঠিত জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ একমঞ্চে বসে প্রথম সভা করেন। বক্তব্যও রাখেন।

ওই সভায় নেতৃবৃন্দের রাজপথে ঐক্যবদ্ধভাবে নানা কর্মসূচি পালনের প্রতিশ্রুতিতে উজ্জীবিত হন দলীয় নেতাকর্মীরা। ওইদিন থেকেই সাংগঠনিক কাজে ঝিমিয়ে পড়া নেতাকর্মীদের মাঝে ফিরে প্রাণচাঞ্চল্য। এর আগে কয়েক বছর থেকে এমন দৃশ্য ছিল অবিশ্বাস্য। মৌলভীবাজার পৌর জনমিলন কেন্দ্রে নবগঠিত জেলা কমিটির ওই দিনের প্রথম সভাটি বিএনপি ঘরানার নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিল ‘টক অব দ্য জেলা’। প্রথম সভার ক’দিন আগে থেকেই দলীয় নেতাকর্মীদের মুখে মুখে ছিল নবগঠিত জেলা কমিটি ও প্রথম সভা। বাদ জাননি অন্যরাও। সমমনা ২০ দলীয় জোট ও অন্যান্য দলের নেতাকর্মীদের মুখেও ছিল এ নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনা। তবে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়াকে সবাই সাধুবাদ জানিয়েছিলেন। জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে বয়ে চলা গ্রুপিং দ্বন্দ্ব কিছুতেই থামছিল না। দলের দুর্দিনে কেন্দ্রীয় নানা কর্মসূচি পালন হতো পৃথক পৃথকভাবে।

এ নিয়ে দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অন্তর্জ্বালা ও ক্ষোভের শেষ ছিল না। জেলা কমিটির ওই দ্বন্দ্ব প্রভাবিত করেছিল উপজেলা পর্যায়ে সহযোগী সংগঠনগুলোতেও। জানা যায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কিছুদিন আগে থেকেই কেন্দ্রীয় কমিটির হস্তক্ষেপে দ্বন্দ্ব নিরসনে নমনীয় হতে থাকেন চলমান একাধিক গ্রুপিং দ্বন্দ্বে থাকা নেতৃবৃন্দ। গেল জাতীয় নির্বাচনে তারা পুরোপুরি ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামেন। এর বাস্তবতা হলো ওই নির্বাচনে নানা প্রতিকূলতা ও অভিযোগের পরও এ জেলার ৪টি সংসদীয় আসনেই সম্মানজনক ভোট পাওয়া। এমনকি একটি আসনে ধানের শীষ প্রতীক জয়লাভও করে। নির্বাচনের পর অপূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্র অনুমোদন দেয়। এতে বিবদমান গ্রুপের শীর্ষ নেতারা স্থান পান। ওই কমিটি ঘোষণার পর প্রথম দিকে দু’একজন ছাড়া সকলেই নবগঠিত কমিটিকে স্বাগত জানান। এরপর পদপদবি নিয়ে যারা মান-অভিমানে ছিলেন। পদত্যাগপত্রও দিয়েছিলেন। তাদের অনেকটাই ম্যানেজ করে দলে ফিরানো হয়। এরপর থেকে ভেদাভেদ ভুলে সুশৃঙ্খলিত ভাবেই চলছে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের কার্যক্রম। সম্প্রতি মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের শহীদ জিয়া অডিটরিয়ামের নামফলক ছাত্রলীগ কর্তৃক ভেঙে ফেলা নিয়ে মৌলভীবাজার প্রেস ক্লাবে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান। সংবাদ সম্মেলন শেষে তারা প্রেস ক্লাবের পাশেই একটি কমিউনিটি সেন্টারে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিও পালন করেন। ওইদিন পুলিশি বাধায় অবশ্য রাজপথে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‌্যালি বা মিছিল করতে পারেননি। এমন অভিযোগ ছিল তাদের। এছাড়া ৫ই সেপ্টেম্বর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী মরহুম এম সাইফুর রহমানের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী একসঙ্গেই আনুষ্ঠানিকভাবেই পালন করে জেলা বিএনপি। নেতাকর্মীরা জানান, এমন দৃশ্য গেল কয়েক বছরের মধ্যে ছিল না মৌলভীবাজার জেলা বিএনপিতে।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ভিপি মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বকশী মিছবাহ-উর রহমান মানবজমিনকে বলেন, আগের চাইতে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি এখন সুসংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ। অতীতের ভেদাভেদের কথা তুলে ধরলে তারা জানান, বড় দল থাকায় নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও মতানৈক্য কিছুটা থাকতেই পারে- এটা স্বাভাবিক। আমাদের মধ্যে সেই ভুলবোঝাবুঝির অবসান হয়েছে। জেলা সভাপতি ও সাবেক এমপি এম নাসের রহমানসহ জেলা নেতৃবৃন্দের ঐকমত্যের ভিত্তিতে উপজেলা ও পৌরকমিটিসহ বিভিন্ন শাখায় নতুন কমিটি হচ্ছে। এতো হামলা মামলার পরও দলের জেলা, উপজেলা ও পৌরকমিটির নেতাকর্মীরা এখন অনেকটাই উজ্জীবিত। রাজপথের কর্মসূচি পালনের বিষয়ে তারা বলেন, মিছিল, মিটিং, র‌্যালি ও সমাবেশ করতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের অনুমতি নেয়ার জন্য বলেন। কিন্তু অনুমতি নিতে গেলে পাওয়া যায় না। আর রাজপথে বের হলেই আমাদের নেতাকর্মীর ওপর নেমে আসে হামলা-মামলার খড়গ। তবে খুব শিগগিরই আমরা আন্দোলনের নতুনত্ব নিয়ে মাঠে সক্রিয় থাকবো।