ঢাকা , শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
গ্রিন সিলেট ট্রাভেলসের আয়োজনে বাংলাদেশে পর্তুগাল দূতাবাস/কনসুলেট চেয়ে খোলা চিঠি স্বৈরাচার সরকার পতনের পর যুক্তরাজ্যে ফিরছেন সিলেট আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপি পর্তুগাল শাখার উদ্যোগে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত! বন্যার্ত মানুষের ত্রান তহবিলের জন্যে ৬ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘোষণা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বেজা শাখার কর্মি সম্মেলন অনুষ্ঠিত বিমানের নতুন চেয়ারম্যান কুলাউড়ার আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও ২৪ কোটা আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা দোয়া মাহফিল পর্তুগালে রাজনগর প্রবাসী ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আত্মপ্রকাশ পর্তুগাল বিএনপি’র আয়োজনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্বরণে দোয়া ও মাহফিল সম্পন্ন বিমূর্ত সব মুর্হুতরা, আমার মা’য়ের সাথের শেষ শনিবার – শাহারুল কিবরিয়া বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনে হত্যার প্রতিবাদে পর্তুগালে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশী প্রবাসীরা

মৌলভীবাজারে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ব্রিটিশ নাগরিক যুবককে হত্যার অভিযোগ

দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্ক:
  • আপডেটের সময় : ০৯:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জানুয়ারী ২০১৯
  • / ৮১৪ টাইম ভিউ

দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্ক: মৌলভীবাজারে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক জালাল উদ্দিন নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শহরের শ্রীমঙ্গল সড়কস্থ উদ্দিপন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে। নিহত জালালের শরিরের ভিবিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। এ ঘটনার পর নিরাময় কেন্দ্রের কাউকে খুজে পাওয়া যায়নি। চিকিৎসা নিতে আসা ২২ জন মাদকাসক্ত রাতে দরজা ভেঙ্গে ভবনের ছাদে উঠে পালিয়ে যায়।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায় হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জের তফতিবাগ এলাকার মৃত মোঃ গিয়াস উদ্দিনের পুত্র জালাল উদ্দিন ৭ থেকে ৮ মাস পূর্বে দেশে আসেন। মাদকাসক্ত থাকায় তাকে উদ্দিপন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করে ২ সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে গত ২৪ ডিসেম্বর বাড়ি নেয়া হয়। পরে আবার ২৯ ডিসেম্বর ভর্তি করা হয় ওই নিরাময় কেন্দ্রে। নিহতের মা রুকসানা আক্তার জানান, রোববার ৬ জনিুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ফোনে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে থেকে জানানো হয়, জালাল অসুস্থ হয়ে পড়েছে, তাঁকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। এ খবরে তাঁরা দ্রুত সিলেট যান এবং হাসপাতালে খোঁজাখুঁজি করে জালালকে পাননি। পরে মৌলভীবাজার এসে উদ্দীপন মাদক নিরাময় কেন্দ্রের সামনে একটি অ্যাম্বুলেন্সের ভেতর তাঁর মৃতদেহ দেখতে পান। এ সময় নিরাময় কেন্দ্রের কাউকে তাঁরা খুঁজে পাননি তারা।
নিহত জালাল দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন। রাব্বি নামের পাঁচ বছর বয়সী তাঁর একটি ছেলে আছে। তাঁর স্ত্রী-সন্তান দেশে থাকতেন। পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা জানিয়েছেন, তাঁরা এই হত্যার ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। খবর পেয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
মৌলভীবাজার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তাপস জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে বোঝা যাবে প্রকৃত ঘটনা।
এ বিষয়ে জানতে উদ্দীপন মাদক নিরাময় কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাঁদের অনেকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাঁরা ধরেননি। ঘটনার পর থেকে তাঁরা পলাতক।
২৫০ শয্যা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আহমেদ ফয়ছল জামান জানান, ময়না তদন্তে প্রাথমিক ভাবে নিহত জালালের শরিরে আঘাতের চিহৃ পাওয়া গেছে। পূর্ণঙ্গ রিপোর্ট আসলে বিস্থারিত জানা যাবে।
উদ্দিপন মাদক নিরাময় কেন্দ্র থেকে পালিয়ে আসা রিপন নামের একজন জানান, জালালকে হাত পা বেঁধে মারধর করা হয়েছে। মারধরের এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে। রিপন আরো জানায় সে নিহত জালাল মাদক নিরাময় কেন্দ্রের ভেতর এক সাথে থাকতো। জালাল তার মাকে দেখার জন্য আকুতি জানালে মাদক নিরাময় কর্তৃপক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে হাত পা বেঁধে শুরু হয় নির্যাতন। রিপন আরো জানায় চিকিৎসা নিতে আসা ২৫ জনের মধ্যে ২২ জন রাতে দরজা ভেঙ্গে ভবনের ছাদে উঠে পালিয়ে যায়। এদের মধ্যে ৩ জন মানসিক ভারসাম্যহীন থাকায় তারা বেরিয়ে যেতে পারে নাই।
নিহত জালালের মামা মোঃ এমদাদুল হক জানান, মাদক নিরাময় কেন্দ্র থেকে জালালের মৃত্যুনিয়ে একেক বার একেক ধরনের কথা বলা হয়। তারা আমার ভাগ্নাকে হাত পা বেঁধে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ স্বাস্তির দাবী করেন।

পোস্ট শেয়ার করুন

মৌলভীবাজারে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ব্রিটিশ নাগরিক যুবককে হত্যার অভিযোগ

আপডেটের সময় : ০৯:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জানুয়ারী ২০১৯

দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্ক: মৌলভীবাজারে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক জালাল উদ্দিন নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শহরের শ্রীমঙ্গল সড়কস্থ উদ্দিপন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে। নিহত জালালের শরিরের ভিবিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। এ ঘটনার পর নিরাময় কেন্দ্রের কাউকে খুজে পাওয়া যায়নি। চিকিৎসা নিতে আসা ২২ জন মাদকাসক্ত রাতে দরজা ভেঙ্গে ভবনের ছাদে উঠে পালিয়ে যায়।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায় হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জের তফতিবাগ এলাকার মৃত মোঃ গিয়াস উদ্দিনের পুত্র জালাল উদ্দিন ৭ থেকে ৮ মাস পূর্বে দেশে আসেন। মাদকাসক্ত থাকায় তাকে উদ্দিপন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করে ২ সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে গত ২৪ ডিসেম্বর বাড়ি নেয়া হয়। পরে আবার ২৯ ডিসেম্বর ভর্তি করা হয় ওই নিরাময় কেন্দ্রে। নিহতের মা রুকসানা আক্তার জানান, রোববার ৬ জনিুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ফোনে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে থেকে জানানো হয়, জালাল অসুস্থ হয়ে পড়েছে, তাঁকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। এ খবরে তাঁরা দ্রুত সিলেট যান এবং হাসপাতালে খোঁজাখুঁজি করে জালালকে পাননি। পরে মৌলভীবাজার এসে উদ্দীপন মাদক নিরাময় কেন্দ্রের সামনে একটি অ্যাম্বুলেন্সের ভেতর তাঁর মৃতদেহ দেখতে পান। এ সময় নিরাময় কেন্দ্রের কাউকে তাঁরা খুঁজে পাননি তারা।
নিহত জালাল দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন। রাব্বি নামের পাঁচ বছর বয়সী তাঁর একটি ছেলে আছে। তাঁর স্ত্রী-সন্তান দেশে থাকতেন। পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা জানিয়েছেন, তাঁরা এই হত্যার ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। খবর পেয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
মৌলভীবাজার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তাপস জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে বোঝা যাবে প্রকৃত ঘটনা।
এ বিষয়ে জানতে উদ্দীপন মাদক নিরাময় কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাঁদের অনেকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাঁরা ধরেননি। ঘটনার পর থেকে তাঁরা পলাতক।
২৫০ শয্যা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আহমেদ ফয়ছল জামান জানান, ময়না তদন্তে প্রাথমিক ভাবে নিহত জালালের শরিরে আঘাতের চিহৃ পাওয়া গেছে। পূর্ণঙ্গ রিপোর্ট আসলে বিস্থারিত জানা যাবে।
উদ্দিপন মাদক নিরাময় কেন্দ্র থেকে পালিয়ে আসা রিপন নামের একজন জানান, জালালকে হাত পা বেঁধে মারধর করা হয়েছে। মারধরের এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে। রিপন আরো জানায় সে নিহত জালাল মাদক নিরাময় কেন্দ্রের ভেতর এক সাথে থাকতো। জালাল তার মাকে দেখার জন্য আকুতি জানালে মাদক নিরাময় কর্তৃপক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে হাত পা বেঁধে শুরু হয় নির্যাতন। রিপন আরো জানায় চিকিৎসা নিতে আসা ২৫ জনের মধ্যে ২২ জন রাতে দরজা ভেঙ্গে ভবনের ছাদে উঠে পালিয়ে যায়। এদের মধ্যে ৩ জন মানসিক ভারসাম্যহীন থাকায় তারা বেরিয়ে যেতে পারে নাই।
নিহত জালালের মামা মোঃ এমদাদুল হক জানান, মাদক নিরাময় কেন্দ্র থেকে জালালের মৃত্যুনিয়ে একেক বার একেক ধরনের কথা বলা হয়। তারা আমার ভাগ্নাকে হাত পা বেঁধে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ স্বাস্তির দাবী করেন।