ঢাকা , বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
পর্তুগালে মানবিক সেচ্ছাসেবী সংগঠন “সদিচ্ছা ফাউন্ডেশন” এর লোগো সম্বলিত টি শার্ট উন্মোচন যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালন করেছে দূতাবাস রোম পর্তুগাল জাসাসের আলিসবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মিলানের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস পালিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা করেছে সম্মিলিত নাগরিক কমিটি ভেনিস বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মনফালকনে গরিঝিয়া শাখা ইতালির আয়োজনে বাংলাদেশের ৫৩ তম বিজয় দিবস উদযাপন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত রোমে সিলেট বিভাগ জাতীয়তাবাদী যুবদল গঠন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা প্রবাসীদের নিয়ে পঞ্চগ্রাম প্রবাসী উন্নয়ন ফোরামের ৭৭ বিশিষ্ট কমিটি গঠন সুয়েব এবং রুবিয়াত আফরিনা ১৮তম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করেছেন অ্যামাজন জঙ্গলে

মেরিন ড্রাইভকে ডেথ জোন বানিয়েছিলেন ওসি প্রদীপ

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : ০৪:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ অগাস্ট ২০২০
  • / ৩১০ টাইম ভিউ

অনলাইন ডেস্ক : সদ্য প্রত্যাহার করা টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের হাতিয়ার ছিল কথিত ক্রসফায়ার বাণিজ্য। ইয়াবার এ প্রবেশদ্বারে ক্রসফায়ারের রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন পুলিশের এই ওসি। কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভকে কার্যত ডেথ জোনে পরিণত করেন তিনি। আতঙ্কে রাতে এ সড়কে চলাচলে মারাত্মক ভীতির সঞ্চার হয় স্থানীয়দের মধ্যে। চাহিদা মতো টাকা না পেয়ে ক্রসফায়ারে হত্যার বিস্তর অভিযোগও রয়েছে প্রদীপ কুমার দাসের বিরুদ্ধে। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে তার নানা নিপীড়নের শিকার হয়েছেন যারা, তারা তার বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

২০১৮ সালের ৪ মে থেকে সারাদেশে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু করে সরকার। এতে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায় ক্রসফায়ারের পরিসংখ্যান। গত ৩০ জুলাই পর্যন্ত শুধু কক্সবাজার জেলায় পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৮৭ জন। এর মধ্যে পুলিশের সঙ্গে ১৭৪ জন, বিজিবির সঙ্গে ৬২ জন ও র‌্যাবের সঙ্গে ৫১ জন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। আর টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন ১৬১ জন। এর মধ্যে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মাধ্যমে ঘটেছে ১৪৪টি ক্রসফায়ারের ঘটনা। এসব ক্রসফায়ারের একটি বড় অংশ সংঘটিত হয় মেরিন ড্রাইভ সড়কে।

যদিও মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানের শুরু থেকেই এ ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- বন্ধের আহ্বান জানিয়ে আসছিল মানবাধিকার সংগঠনগুলো। অন্যদিকে এমন অভিযানের পরও কমেনি মাদকের চোরাচালান। বরং কিছু ক্ষেত্রে মাদকের সরবরাহ বৃদ্ধির তথ্য মিলেছে। পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হিসাবে অভিযান শুরুর পর এক বছরে বিভিন্ন সংস্থার অভিযানে ৫ কোটি ১৪ লাখ ইয়াবা বড়ি এবং ১০ মণ হেরোইন উদ্ধার হয়েছে, যা আগের বছরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। এর আগে কোনো বছরই ৪ কোটির বেশি ইয়াবা বড়ি উদ্ধার হয়নি। এমন বাস্তবতায় মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানের নামে কথিত ক্রসফায়ার বৃদ্ধির ঘটনার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরুর পর টেকনাফে পুলিশের গ্রেপ্তার-বাণিজ্যের স্থলে জায়গা নেয় কথিত ‘ক্রসফায়ার-বাণিজ্য’। গত ২৪ জুলাই উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরকেন্দ্রিক ইয়াবা গডফাদার মৌলভি বখতিয়ার নামের এক ইউপি সদস্যকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ অভিযান চালিয়ে মৌলভি বখতিয়ারসহ তাহের নামের আরও এক রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করেন ওই রাতে। একদিন পর দুজনের ভাগ্যে জোটে কথিত বন্দুকযুদ্ধ। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়, মৌলভি বখতিয়ারের ঘর থেকে ১০ লাখ টাকা এবং ২০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে।

সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান (৩৬)। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছে রাশেদের পরিবার।

পোস্ট শেয়ার করুন

মেরিন ড্রাইভকে ডেথ জোন বানিয়েছিলেন ওসি প্রদীপ

আপডেটের সময় : ০৪:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ অগাস্ট ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : সদ্য প্রত্যাহার করা টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের হাতিয়ার ছিল কথিত ক্রসফায়ার বাণিজ্য। ইয়াবার এ প্রবেশদ্বারে ক্রসফায়ারের রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন পুলিশের এই ওসি। কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভকে কার্যত ডেথ জোনে পরিণত করেন তিনি। আতঙ্কে রাতে এ সড়কে চলাচলে মারাত্মক ভীতির সঞ্চার হয় স্থানীয়দের মধ্যে। চাহিদা মতো টাকা না পেয়ে ক্রসফায়ারে হত্যার বিস্তর অভিযোগও রয়েছে প্রদীপ কুমার দাসের বিরুদ্ধে। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে তার নানা নিপীড়নের শিকার হয়েছেন যারা, তারা তার বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

২০১৮ সালের ৪ মে থেকে সারাদেশে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু করে সরকার। এতে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায় ক্রসফায়ারের পরিসংখ্যান। গত ৩০ জুলাই পর্যন্ত শুধু কক্সবাজার জেলায় পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৮৭ জন। এর মধ্যে পুলিশের সঙ্গে ১৭৪ জন, বিজিবির সঙ্গে ৬২ জন ও র‌্যাবের সঙ্গে ৫১ জন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। আর টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন ১৬১ জন। এর মধ্যে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মাধ্যমে ঘটেছে ১৪৪টি ক্রসফায়ারের ঘটনা। এসব ক্রসফায়ারের একটি বড় অংশ সংঘটিত হয় মেরিন ড্রাইভ সড়কে।

যদিও মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানের শুরু থেকেই এ ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- বন্ধের আহ্বান জানিয়ে আসছিল মানবাধিকার সংগঠনগুলো। অন্যদিকে এমন অভিযানের পরও কমেনি মাদকের চোরাচালান। বরং কিছু ক্ষেত্রে মাদকের সরবরাহ বৃদ্ধির তথ্য মিলেছে। পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হিসাবে অভিযান শুরুর পর এক বছরে বিভিন্ন সংস্থার অভিযানে ৫ কোটি ১৪ লাখ ইয়াবা বড়ি এবং ১০ মণ হেরোইন উদ্ধার হয়েছে, যা আগের বছরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। এর আগে কোনো বছরই ৪ কোটির বেশি ইয়াবা বড়ি উদ্ধার হয়নি। এমন বাস্তবতায় মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানের নামে কথিত ক্রসফায়ার বৃদ্ধির ঘটনার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরুর পর টেকনাফে পুলিশের গ্রেপ্তার-বাণিজ্যের স্থলে জায়গা নেয় কথিত ‘ক্রসফায়ার-বাণিজ্য’। গত ২৪ জুলাই উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরকেন্দ্রিক ইয়াবা গডফাদার মৌলভি বখতিয়ার নামের এক ইউপি সদস্যকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ অভিযান চালিয়ে মৌলভি বখতিয়ারসহ তাহের নামের আরও এক রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করেন ওই রাতে। একদিন পর দুজনের ভাগ্যে জোটে কথিত বন্দুকযুদ্ধ। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়, মৌলভি বখতিয়ারের ঘর থেকে ১০ লাখ টাকা এবং ২০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে।

সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান (৩৬)। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছে রাশেদের পরিবার।