ঢাকা , রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
বিএনপি পর্তুগাল শাখার উদ্যোগে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত! বন্যার্ত মানুষের ত্রান তহবিলের জন্যে ৬ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘোষণা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বেজা শাখার কর্মি সম্মেলন অনুষ্ঠিত বিমানের নতুন চেয়ারম্যান কুলাউড়ার আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও ২৪ কোটা আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা দোয়া মাহফিল পর্তুগালে রাজনগর প্রবাসী ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আত্মপ্রকাশ পর্তুগাল বিএনপি’র আয়োজনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্বরণে দোয়া ও মাহফিল সম্পন্ন বিমূর্ত সব মুর্হুতরা, আমার মা’য়ের সাথের শেষ শনিবার – শাহারুল কিবরিয়া বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনে হত্যার প্রতিবাদে পর্তুগালে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশী প্রবাসীরা প্রিয়জনদের মানসিক রোগ যদি আপনজন বুঝতে না পারেন আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা ও অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে

মেরিন ড্রাইভকে ডেথ জোন বানিয়েছিলেন ওসি প্রদীপ

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : ০৪:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ অগাস্ট ২০২০
  • / ২৬৮ টাইম ভিউ

অনলাইন ডেস্ক : সদ্য প্রত্যাহার করা টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের হাতিয়ার ছিল কথিত ক্রসফায়ার বাণিজ্য। ইয়াবার এ প্রবেশদ্বারে ক্রসফায়ারের রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন পুলিশের এই ওসি। কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভকে কার্যত ডেথ জোনে পরিণত করেন তিনি। আতঙ্কে রাতে এ সড়কে চলাচলে মারাত্মক ভীতির সঞ্চার হয় স্থানীয়দের মধ্যে। চাহিদা মতো টাকা না পেয়ে ক্রসফায়ারে হত্যার বিস্তর অভিযোগও রয়েছে প্রদীপ কুমার দাসের বিরুদ্ধে। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে তার নানা নিপীড়নের শিকার হয়েছেন যারা, তারা তার বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

২০১৮ সালের ৪ মে থেকে সারাদেশে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু করে সরকার। এতে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায় ক্রসফায়ারের পরিসংখ্যান। গত ৩০ জুলাই পর্যন্ত শুধু কক্সবাজার জেলায় পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৮৭ জন। এর মধ্যে পুলিশের সঙ্গে ১৭৪ জন, বিজিবির সঙ্গে ৬২ জন ও র‌্যাবের সঙ্গে ৫১ জন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। আর টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন ১৬১ জন। এর মধ্যে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মাধ্যমে ঘটেছে ১৪৪টি ক্রসফায়ারের ঘটনা। এসব ক্রসফায়ারের একটি বড় অংশ সংঘটিত হয় মেরিন ড্রাইভ সড়কে।

যদিও মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানের শুরু থেকেই এ ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- বন্ধের আহ্বান জানিয়ে আসছিল মানবাধিকার সংগঠনগুলো। অন্যদিকে এমন অভিযানের পরও কমেনি মাদকের চোরাচালান। বরং কিছু ক্ষেত্রে মাদকের সরবরাহ বৃদ্ধির তথ্য মিলেছে। পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হিসাবে অভিযান শুরুর পর এক বছরে বিভিন্ন সংস্থার অভিযানে ৫ কোটি ১৪ লাখ ইয়াবা বড়ি এবং ১০ মণ হেরোইন উদ্ধার হয়েছে, যা আগের বছরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। এর আগে কোনো বছরই ৪ কোটির বেশি ইয়াবা বড়ি উদ্ধার হয়নি। এমন বাস্তবতায় মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানের নামে কথিত ক্রসফায়ার বৃদ্ধির ঘটনার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরুর পর টেকনাফে পুলিশের গ্রেপ্তার-বাণিজ্যের স্থলে জায়গা নেয় কথিত ‘ক্রসফায়ার-বাণিজ্য’। গত ২৪ জুলাই উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরকেন্দ্রিক ইয়াবা গডফাদার মৌলভি বখতিয়ার নামের এক ইউপি সদস্যকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ অভিযান চালিয়ে মৌলভি বখতিয়ারসহ তাহের নামের আরও এক রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করেন ওই রাতে। একদিন পর দুজনের ভাগ্যে জোটে কথিত বন্দুকযুদ্ধ। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়, মৌলভি বখতিয়ারের ঘর থেকে ১০ লাখ টাকা এবং ২০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে।

সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান (৩৬)। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছে রাশেদের পরিবার।

পোস্ট শেয়ার করুন

মেরিন ড্রাইভকে ডেথ জোন বানিয়েছিলেন ওসি প্রদীপ

আপডেটের সময় : ০৪:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ অগাস্ট ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : সদ্য প্রত্যাহার করা টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের হাতিয়ার ছিল কথিত ক্রসফায়ার বাণিজ্য। ইয়াবার এ প্রবেশদ্বারে ক্রসফায়ারের রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন পুলিশের এই ওসি। কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভকে কার্যত ডেথ জোনে পরিণত করেন তিনি। আতঙ্কে রাতে এ সড়কে চলাচলে মারাত্মক ভীতির সঞ্চার হয় স্থানীয়দের মধ্যে। চাহিদা মতো টাকা না পেয়ে ক্রসফায়ারে হত্যার বিস্তর অভিযোগও রয়েছে প্রদীপ কুমার দাসের বিরুদ্ধে। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে তার নানা নিপীড়নের শিকার হয়েছেন যারা, তারা তার বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

২০১৮ সালের ৪ মে থেকে সারাদেশে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু করে সরকার। এতে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায় ক্রসফায়ারের পরিসংখ্যান। গত ৩০ জুলাই পর্যন্ত শুধু কক্সবাজার জেলায় পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৮৭ জন। এর মধ্যে পুলিশের সঙ্গে ১৭৪ জন, বিজিবির সঙ্গে ৬২ জন ও র‌্যাবের সঙ্গে ৫১ জন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। আর টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন ১৬১ জন। এর মধ্যে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মাধ্যমে ঘটেছে ১৪৪টি ক্রসফায়ারের ঘটনা। এসব ক্রসফায়ারের একটি বড় অংশ সংঘটিত হয় মেরিন ড্রাইভ সড়কে।

যদিও মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানের শুরু থেকেই এ ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- বন্ধের আহ্বান জানিয়ে আসছিল মানবাধিকার সংগঠনগুলো। অন্যদিকে এমন অভিযানের পরও কমেনি মাদকের চোরাচালান। বরং কিছু ক্ষেত্রে মাদকের সরবরাহ বৃদ্ধির তথ্য মিলেছে। পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হিসাবে অভিযান শুরুর পর এক বছরে বিভিন্ন সংস্থার অভিযানে ৫ কোটি ১৪ লাখ ইয়াবা বড়ি এবং ১০ মণ হেরোইন উদ্ধার হয়েছে, যা আগের বছরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। এর আগে কোনো বছরই ৪ কোটির বেশি ইয়াবা বড়ি উদ্ধার হয়নি। এমন বাস্তবতায় মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানের নামে কথিত ক্রসফায়ার বৃদ্ধির ঘটনার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরুর পর টেকনাফে পুলিশের গ্রেপ্তার-বাণিজ্যের স্থলে জায়গা নেয় কথিত ‘ক্রসফায়ার-বাণিজ্য’। গত ২৪ জুলাই উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরকেন্দ্রিক ইয়াবা গডফাদার মৌলভি বখতিয়ার নামের এক ইউপি সদস্যকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ অভিযান চালিয়ে মৌলভি বখতিয়ারসহ তাহের নামের আরও এক রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করেন ওই রাতে। একদিন পর দুজনের ভাগ্যে জোটে কথিত বন্দুকযুদ্ধ। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়, মৌলভি বখতিয়ারের ঘর থেকে ১০ লাখ টাকা এবং ২০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে।

সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান (৩৬)। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছে রাশেদের পরিবার।