ঢাকা , রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
বিএনপি পর্তুগাল শাখার উদ্যোগে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত! বন্যার্ত মানুষের ত্রান তহবিলের জন্যে ৬ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘোষণা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বেজা শাখার কর্মি সম্মেলন অনুষ্ঠিত বিমানের নতুন চেয়ারম্যান কুলাউড়ার আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও ২৪ কোটা আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা দোয়া মাহফিল পর্তুগালে রাজনগর প্রবাসী ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আত্মপ্রকাশ পর্তুগাল বিএনপি’র আয়োজনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্বরণে দোয়া ও মাহফিল সম্পন্ন বিমূর্ত সব মুর্হুতরা, আমার মা’য়ের সাথের শেষ শনিবার – শাহারুল কিবরিয়া বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনে হত্যার প্রতিবাদে পর্তুগালে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশী প্রবাসীরা প্রিয়জনদের মানসিক রোগ যদি আপনজন বুঝতে না পারেন আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা ও অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে

মানসিক রোগ নিরূপণ এবং চিকিৎসায় বিলম্বের কারন ও করনীয়

ডা.সাঈদ এনাম
  • আপডেটের সময় : ১২:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৪৩২ টাইম ভিউ

মানসিক রোগ নিরূপণ এবং চিকিৎসায় বিলম্বের কারন ও করনীয়,

আমাদের দেশে মানসিক রোগ নিয়ে অসচেতনতার এবং অজ্ঞতার জন্যে এর ডায়াগনোসিস অন্যান্য রোগের তুলনায় খানিকটা দেরীতেই হয়। এর অনেক গুলো কারণ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম অজ্ঞতা, কুসংস্কার, লজ্জা, মানসিক রোগ নিয়ে হীনমন্যতা।

মানসিক রোগ জানা সত্ত্বেও অনেকে আছেন সাইকিয়াট্রিস্ট দেখাতে লজ্জাবোধ করেন। ভাবেন সমাজ বা পরিবার কিভাবে সেটা দেখবে। সেই ভয়ে তারা সাইকিয়াট্রিস্ট এর বদলে দেখান অন্য ডিসিপ্লিনের ডাক্তার। কেউ কেউ দেখান কবিরাজ, ভন্ডপীর, ভন্ড সাধক ও সন্যাসী। এতে রোগ নিরূপণ যেমন দেরী হয় তেমনি রোগের জটিলতা এবং রোগী নিয়ে ভোগান্তি উভয়ই বাড়ে ।

মানসিক রোগ নিয়ে লজ্জার কিছু নেই। দেশের প্রতি পাঁচজনের একজন কোন না কোন রকমের মানসিক রোগে ভুগছেন। উন্নত বিশ্বে এ কাকতালীয় ভাবে সংখ্যাটি প্রায় একই রকম। তবে উন্নত বিশ্বের মানুষ মানসিক রোগ নিয়ে অনেক অনেক সচেতন।

আবার মানসিক রোগ ডায়াগনোসিস হবার পর অনেকে ব্যাকুল থাকেন এর জন্যে কি রোগীকে আজীবন ঔষধ খেতে হবে?

দেখুন, অনেক মানসিক রোগ আছে যার জন্যে কোন ঔষধই লাগেনা। নিয়মিত কাউনসেলিং, রোগ সম্পর্কে বুঝানো, সাইকোথেরাপি এসবই যথেষ্ট। আবার কিছু আছে হয়তো সাময়িক সময়ের জন্যে নিয়মিত ঔষধ খেয়ে যেতে হয়।

এতে ভয় বা উৎকন্ঠার কিছু নেই। ডায়বেটিস, হাইপ্রেশার এসব রোগের জন্যে রোগীকে সারাজীবন ঔষধ খেতে হয়, এমন কি ইঞ্জেকশন সেবন করতে হয়। নয় কি?

অনেকের ধারণা, মানসিক রোগের ঔষধ বোধ হয় ঘুমের ঔষধ। সেটা মোটেও ঠিক নয়। মুলতঃ মানসিক রোগের ঔষধের কার্যকারিতায় অংশ হিসেবে রোগীর ব্রেইনের উত্তেজনা ভাবটি কমে আসে। ফলশ্রুতিতে তার ঘুম আসতে পারে এবং এটাই কাম্য। ভালো ঘুম মানেই হলো ব্রেইনের বিশ্রাম। ব্রেইন বিশ্রাম না নিলে সে কাজ করবে কিভাবে। আচার-আচরণ স্বাভাবিক রাখবে কিভাবে? আচার-আচরণ নিয়ন্ত্রণতো আমাদের ব্রেইনেরই কাজ।

মানসিক রোগের ঔষধের দাম কি খুব বেশী?

না মোটেই নয় বরং ক্ষেত্র বিশেষে অন্যান্য অসূখের ঔষধের দামের চেয়ে মানসিক রোগের ঔষধের দাম অনেক অনেক কম। এবং ক্ষেত্রবিশেষে সহজলভ্য। ব্রেইন ও মানসিক রোগের চিকিৎসায় চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেক অনেক এগিয়েছে বিগত কয়েক দশকে।

মানসিক রোগের ঔষধ কাজ করতে কতদিন লাগে?

মানসিক রোগের ঔষধের কার্যকারিতা অনেকটা ম্যাজিকের মতো। ডোপামিন নিউরোট্রান্সমিটার রিসেপ্টর ব্লকার ( DA) এটিপিক্যাল এন্টিসাইকোটিক (Atypical Antipsychotic)
খুব দ্রুত কাজ করে।

দেখা যায় বছরের পর বছর যে রোগী আচরণ এতোদিন অস্বাভাবিক ছিলো, চলাফেরা কাজকর্ম অগোছালো ছিলো, যাকেতাকে ডিসটার্ব করতো, একাএকা কতা বলতো, হাসতো, মারতো, চিৎকার চেচামেচি করতো, সে রোগী ক্ষেত্রবিশেষে মাত্র এক কয়েক ডোজ ঔষধ সেবনের পর সেই শান্ত হয়ে আসেন, তার আচার-আচরণ স্বাভাবিক হয়ে আসতে থাকে।

আসুন, মানসিক রোগ নিয়ে সচেতন হই। লজ্জা ভয় হীনমন্যতা বা কুসংস্কার নয়। আধুনিক চিকিৎসার দ্বারস্থ হই।

ডা.সাঈদ এনাম
সহকারী অধ্যাপক

সাইকিয়াট্রি ।
ফেলো, আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক এসোসিয়েশন

পোস্ট শেয়ার করুন

মানসিক রোগ নিরূপণ এবং চিকিৎসায় বিলম্বের কারন ও করনীয়

আপডেটের সময় : ১২:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

মানসিক রোগ নিরূপণ এবং চিকিৎসায় বিলম্বের কারন ও করনীয়,

আমাদের দেশে মানসিক রোগ নিয়ে অসচেতনতার এবং অজ্ঞতার জন্যে এর ডায়াগনোসিস অন্যান্য রোগের তুলনায় খানিকটা দেরীতেই হয়। এর অনেক গুলো কারণ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম অজ্ঞতা, কুসংস্কার, লজ্জা, মানসিক রোগ নিয়ে হীনমন্যতা।

মানসিক রোগ জানা সত্ত্বেও অনেকে আছেন সাইকিয়াট্রিস্ট দেখাতে লজ্জাবোধ করেন। ভাবেন সমাজ বা পরিবার কিভাবে সেটা দেখবে। সেই ভয়ে তারা সাইকিয়াট্রিস্ট এর বদলে দেখান অন্য ডিসিপ্লিনের ডাক্তার। কেউ কেউ দেখান কবিরাজ, ভন্ডপীর, ভন্ড সাধক ও সন্যাসী। এতে রোগ নিরূপণ যেমন দেরী হয় তেমনি রোগের জটিলতা এবং রোগী নিয়ে ভোগান্তি উভয়ই বাড়ে ।

মানসিক রোগ নিয়ে লজ্জার কিছু নেই। দেশের প্রতি পাঁচজনের একজন কোন না কোন রকমের মানসিক রোগে ভুগছেন। উন্নত বিশ্বে এ কাকতালীয় ভাবে সংখ্যাটি প্রায় একই রকম। তবে উন্নত বিশ্বের মানুষ মানসিক রোগ নিয়ে অনেক অনেক সচেতন।

আবার মানসিক রোগ ডায়াগনোসিস হবার পর অনেকে ব্যাকুল থাকেন এর জন্যে কি রোগীকে আজীবন ঔষধ খেতে হবে?

দেখুন, অনেক মানসিক রোগ আছে যার জন্যে কোন ঔষধই লাগেনা। নিয়মিত কাউনসেলিং, রোগ সম্পর্কে বুঝানো, সাইকোথেরাপি এসবই যথেষ্ট। আবার কিছু আছে হয়তো সাময়িক সময়ের জন্যে নিয়মিত ঔষধ খেয়ে যেতে হয়।

এতে ভয় বা উৎকন্ঠার কিছু নেই। ডায়বেটিস, হাইপ্রেশার এসব রোগের জন্যে রোগীকে সারাজীবন ঔষধ খেতে হয়, এমন কি ইঞ্জেকশন সেবন করতে হয়। নয় কি?

অনেকের ধারণা, মানসিক রোগের ঔষধ বোধ হয় ঘুমের ঔষধ। সেটা মোটেও ঠিক নয়। মুলতঃ মানসিক রোগের ঔষধের কার্যকারিতায় অংশ হিসেবে রোগীর ব্রেইনের উত্তেজনা ভাবটি কমে আসে। ফলশ্রুতিতে তার ঘুম আসতে পারে এবং এটাই কাম্য। ভালো ঘুম মানেই হলো ব্রেইনের বিশ্রাম। ব্রেইন বিশ্রাম না নিলে সে কাজ করবে কিভাবে। আচার-আচরণ স্বাভাবিক রাখবে কিভাবে? আচার-আচরণ নিয়ন্ত্রণতো আমাদের ব্রেইনেরই কাজ।

মানসিক রোগের ঔষধের দাম কি খুব বেশী?

না মোটেই নয় বরং ক্ষেত্র বিশেষে অন্যান্য অসূখের ঔষধের দামের চেয়ে মানসিক রোগের ঔষধের দাম অনেক অনেক কম। এবং ক্ষেত্রবিশেষে সহজলভ্য। ব্রেইন ও মানসিক রোগের চিকিৎসায় চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেক অনেক এগিয়েছে বিগত কয়েক দশকে।

মানসিক রোগের ঔষধ কাজ করতে কতদিন লাগে?

মানসিক রোগের ঔষধের কার্যকারিতা অনেকটা ম্যাজিকের মতো। ডোপামিন নিউরোট্রান্সমিটার রিসেপ্টর ব্লকার ( DA) এটিপিক্যাল এন্টিসাইকোটিক (Atypical Antipsychotic)
খুব দ্রুত কাজ করে।

দেখা যায় বছরের পর বছর যে রোগী আচরণ এতোদিন অস্বাভাবিক ছিলো, চলাফেরা কাজকর্ম অগোছালো ছিলো, যাকেতাকে ডিসটার্ব করতো, একাএকা কতা বলতো, হাসতো, মারতো, চিৎকার চেচামেচি করতো, সে রোগী ক্ষেত্রবিশেষে মাত্র এক কয়েক ডোজ ঔষধ সেবনের পর সেই শান্ত হয়ে আসেন, তার আচার-আচরণ স্বাভাবিক হয়ে আসতে থাকে।

আসুন, মানসিক রোগ নিয়ে সচেতন হই। লজ্জা ভয় হীনমন্যতা বা কুসংস্কার নয়। আধুনিক চিকিৎসার দ্বারস্থ হই।

ডা.সাঈদ এনাম
সহকারী অধ্যাপক

সাইকিয়াট্রি ।
ফেলো, আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক এসোসিয়েশন