ঢাকা , রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলতেবিভিন্ন চক্রান্তে লিপ্ত আ’লীগ গ্রিন সিলেট ট্রাভেলসের আয়োজনে বাংলাদেশে পর্তুগাল দূতাবাস/কনসুলেট চেয়ে খোলা চিঠি স্বৈরাচার সরকার পতনের পর যুক্তরাজ্যে ফিরছেন সিলেট আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপি পর্তুগাল শাখার উদ্যোগে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত! বন্যার্ত মানুষের ত্রান তহবিলের জন্যে ৬ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘোষণা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বেজা শাখার কর্মি সম্মেলন অনুষ্ঠিত বিমানের নতুন চেয়ারম্যান কুলাউড়ার আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও ২৪ কোটা আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা দোয়া মাহফিল পর্তুগালে রাজনগর প্রবাসী ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আত্মপ্রকাশ পর্তুগাল বিএনপি’র আয়োজনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্বরণে দোয়া ও মাহফিল সম্পন্ন বিমূর্ত সব মুর্হুতরা, আমার মা’য়ের সাথের শেষ শনিবার – শাহারুল কিবরিয়া

বড়লেখায় কোটি টাকার আগরের ব্যবসা হলেও শ্রমিকদের জীবনমান খুবই করুণ

বড়লেখা প্রতিনিধি:
  • আপডেটের সময় : ১০:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ অক্টোবর ২০২০
  • / ৪২৫ টাইম ভিউ

বড়লেখায় তৈরি করা আগর ও আতর অতিমূল্যবান। দেশে বিদেশে রয়েছে এই আতরের খুব সুখ্যাতি। আতরের মূল্য কখনো কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। অথচ এ শিল্পের নেপথ্য কারিগরদের জীবন-জীবিকা করোনা কালিন সময়ে বড় কঠিন হয়ে পরেছে। আগর ও আতর ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকার লাভ করলেও এ শিল্পের কারিগরদের জীবনমানের কোন পরিবর্তন আসেনি। নুন আনতে পান্তা ফোরানো অবস্থায় কাটে তাদের দিন ।

বাংলাদেশে প্রতি বছর বড়লেখার আগর ও আতর রপ্তানির মাধ্যমে আয় হয় কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা। বর্তমানে আতরের মূল্যবৃদ্ধি পেলেও হুমকির মুখে শ্রমিকদের জীবন ।

মৌলভীবাজারের সবচেয়ে আতরসমৃদ্ধ উপজেলা হচ্ছে বড়লেখা। উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের প্রতিটি বাড়িতে রয়েছে আগরের গাছ। এছাড়া জেলার বিভিন্ন পাহাড়ি জনপদে বিচ্ছিন্ন ভাবে আগর গাছ রয়েছে। তবে সুজানগরের প্রতিটি বাড়িতে আছে আগর প্রক্রিয়াজাত করণ কারখানা। এই সুজানগর গ্রামের আগর শ্রমিকের নাম সুরুজ মিয়া রহিম মিয়া ছিদ্দেক আলী মূলধনহীন শ্রমিকরা যুগ যুগ ধরে মূল্যবান সুগন্ধি আতর তৈরি করে আসলেও তাদের জীবনের চাকা থেমে আছে আদিম কালে।

প্রতিদিনের ব্যয় মিটিয়ে সামান্য পুঁজি (টাকা) জমিয়ে আগর কাঠ কিনে আগর উড তৈরি করে বিক্রি করেন। এতে তাদের বাড়তি কিছু আয় হয়। তবে জীবন যাত্রার বিশেষ কোন পরিবর্তন আসে না। এ গ্রামের হাজারের ওপর আগর শ্রমিক রয়েছেন।

অভাবী মানুষগুলো বেশির ভাগ সময় অন্যের কাজ করে দিন কাটান। আগরের কাঠ থেকে কালো ও সাদা অংশগুলোকে বাটাল দিয়ে কেটে কেটে আলাদা করেন। সারাদিন আট-দশ ঘণ্টা কাজ করে তিনশ’ থেকে সাড়ে তিনশ” টাকা মজুরি পান। আর বাড়তি কিছু টাকা জোগাড় করতে পারলে নিজেরা আগর কাঠ কিনে আগর উড তৈরি করে ডিলারের কাছে বিক্রি করে যত সামান্য বাড়তি আয় করেন কিছু শ্রমিক।

শ্রমিকরা জানান, সন্তানদের লেখাপড়া, পরিবারের খাবার খরচ ৩শ টাকার মজুরি দিয়ে চলে না। ফলে অবাব অনটনের মধ্যেই অনেকটা যুদ্ধ করে তাদের সংসার চালাতে হয়। সন্তানদের চাহিদা মেটাতে পারেন না আর না পারেন তাদের শিক্ষিত করে অন্য পেশার উপযোগী করে গড়ে তুলতেও পারছেন না। তাই যুগ যুগ ধরে পূর্ব পুরুষের পেশাকে আকড়ে পরে আছেন।

কথা হয় মরিয়ম আগর আতর ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক সজীব আহমেদের সাথে তিনি বলেন, সুজানগর গ্রামে হাজারের উপর আগর শওমিক আছেন যারা খুবই গরীব। দিন আনে, দিন খায়। এসব শ্রমিকদের যদি সরকারি কোনো সাহায্য বা ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়া হতো তাহলে তাদের জীবনে কিছুটা সচ্ছলতা ফিরে আসতে পারে।

এ বিষয়ে বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম আল ইমরান সোমবার বলেন, আগর শ্রামকদের বিষয়টি এতদিন আমার দৃষ্টিতে ছিল না। আগর ও আতরের অসহায়-অসচ্ছল শ্রমিকদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে আনবো।#

পোস্ট শেয়ার করুন

বড়লেখায় কোটি টাকার আগরের ব্যবসা হলেও শ্রমিকদের জীবনমান খুবই করুণ

আপডেটের সময় : ১০:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ অক্টোবর ২০২০

বড়লেখায় তৈরি করা আগর ও আতর অতিমূল্যবান। দেশে বিদেশে রয়েছে এই আতরের খুব সুখ্যাতি। আতরের মূল্য কখনো কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। অথচ এ শিল্পের নেপথ্য কারিগরদের জীবন-জীবিকা করোনা কালিন সময়ে বড় কঠিন হয়ে পরেছে। আগর ও আতর ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকার লাভ করলেও এ শিল্পের কারিগরদের জীবনমানের কোন পরিবর্তন আসেনি। নুন আনতে পান্তা ফোরানো অবস্থায় কাটে তাদের দিন ।

বাংলাদেশে প্রতি বছর বড়লেখার আগর ও আতর রপ্তানির মাধ্যমে আয় হয় কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা। বর্তমানে আতরের মূল্যবৃদ্ধি পেলেও হুমকির মুখে শ্রমিকদের জীবন ।

মৌলভীবাজারের সবচেয়ে আতরসমৃদ্ধ উপজেলা হচ্ছে বড়লেখা। উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের প্রতিটি বাড়িতে রয়েছে আগরের গাছ। এছাড়া জেলার বিভিন্ন পাহাড়ি জনপদে বিচ্ছিন্ন ভাবে আগর গাছ রয়েছে। তবে সুজানগরের প্রতিটি বাড়িতে আছে আগর প্রক্রিয়াজাত করণ কারখানা। এই সুজানগর গ্রামের আগর শ্রমিকের নাম সুরুজ মিয়া রহিম মিয়া ছিদ্দেক আলী মূলধনহীন শ্রমিকরা যুগ যুগ ধরে মূল্যবান সুগন্ধি আতর তৈরি করে আসলেও তাদের জীবনের চাকা থেমে আছে আদিম কালে।

প্রতিদিনের ব্যয় মিটিয়ে সামান্য পুঁজি (টাকা) জমিয়ে আগর কাঠ কিনে আগর উড তৈরি করে বিক্রি করেন। এতে তাদের বাড়তি কিছু আয় হয়। তবে জীবন যাত্রার বিশেষ কোন পরিবর্তন আসে না। এ গ্রামের হাজারের ওপর আগর শ্রমিক রয়েছেন।

অভাবী মানুষগুলো বেশির ভাগ সময় অন্যের কাজ করে দিন কাটান। আগরের কাঠ থেকে কালো ও সাদা অংশগুলোকে বাটাল দিয়ে কেটে কেটে আলাদা করেন। সারাদিন আট-দশ ঘণ্টা কাজ করে তিনশ’ থেকে সাড়ে তিনশ” টাকা মজুরি পান। আর বাড়তি কিছু টাকা জোগাড় করতে পারলে নিজেরা আগর কাঠ কিনে আগর উড তৈরি করে ডিলারের কাছে বিক্রি করে যত সামান্য বাড়তি আয় করেন কিছু শ্রমিক।

শ্রমিকরা জানান, সন্তানদের লেখাপড়া, পরিবারের খাবার খরচ ৩শ টাকার মজুরি দিয়ে চলে না। ফলে অবাব অনটনের মধ্যেই অনেকটা যুদ্ধ করে তাদের সংসার চালাতে হয়। সন্তানদের চাহিদা মেটাতে পারেন না আর না পারেন তাদের শিক্ষিত করে অন্য পেশার উপযোগী করে গড়ে তুলতেও পারছেন না। তাই যুগ যুগ ধরে পূর্ব পুরুষের পেশাকে আকড়ে পরে আছেন।

কথা হয় মরিয়ম আগর আতর ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক সজীব আহমেদের সাথে তিনি বলেন, সুজানগর গ্রামে হাজারের উপর আগর শওমিক আছেন যারা খুবই গরীব। দিন আনে, দিন খায়। এসব শ্রমিকদের যদি সরকারি কোনো সাহায্য বা ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়া হতো তাহলে তাদের জীবনে কিছুটা সচ্ছলতা ফিরে আসতে পারে।

এ বিষয়ে বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম আল ইমরান সোমবার বলেন, আগর শ্রামকদের বিষয়টি এতদিন আমার দৃষ্টিতে ছিল না। আগর ও আতরের অসহায়-অসচ্ছল শ্রমিকদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে আনবো।#