আপডেট

x


বিনামূল্যে মেধাবী তৈরি করে যাচ্ছেন ডিসির স্ত্রী

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৯ | ৯:০৫ অপরাহ্ণ | 180 বার

বিনামূল্যে মেধাবী তৈরি করে যাচ্ছেন ডিসির স্ত্রী

রুহি আসরাফ। ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার। আর তার স্বামী ভারতের অরুণাচল প্রদেশের সুবনসিরির জেলাপ্রশাসক। স্বামীর বদলির চাকরি হওয়ার কারণে একসঙ্গে থাকার জন্য রুহিকেও চাকরি ছাড়তে হয়েছিল।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, চাকরি ছেড়ে চণ্ডীগড় থেকে পাড়ি দেন পাহাড়-জঙ্গল ঘেরা অরুণাচল প্রদেশের প্রত্যন্ত এলাকা সুবনসিরিতে স্বামীর কাছে। ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার রুহি আসরাফ এখন সুবনসিরির সব শিক্ষার্থীদের কাছে যেন আশীর্বাদ।



রুহির স্বামী দানিশ আসরাফ ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের (আইএএস) অফিসার। ২০১৬ সালে তিনি অরুণাচল প্রদেশের সুবনসিরিতে জেলাশাসক হিসেবে বদলি হয়ে আসেন।

তার আগে ছিলেন চণ্ডীগড়ে। তার সঙ্গে তার স্ত্রী রুহিও সুবনসিরিতে চলে আসেন। জেলাশাসকের বাংলোটাও খুব নিরিবিলি জায়গায়। বংলোয় যাওয়ার রাস্তাও দুর্গম। সচরাচর কোনো জেলাশাসকই তাই এই বাংলোয় ওঠেন না।

৭ হাজার ৩২ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে অবস্থিত সুবনসিরি অরুণাচল প্রদেশের সবচেয়ে প্রত্যন্ত জেলা। এর বেশির ভাগটাই ঘন জঙ্গলে ঘেরা।

স্বামীর পাশাপাশি রুহিও স্থির করেছিলেন, প্রত্যন্ত এই জেলার উন্নয়নে হাত দেবেন। কিন্তু কীভাবে? রাস্তাটা খুলে গেল নিজে থেকেই। দানিশ বদলি হয়ে আসার কয়েক দিন পরই দ্বাদশ শ্রেণির একদল ছাত্র তার অফিসে এসে হাজির হয়।

তাদের স্কুলে দীর্ঘ পাঁচ বছর পদার্থবিদ্যায় কোনো শিক্ষক নেই। শিক্ষক ছাড়া নিজেরাই এতদিন কোনো ভাবে পড়েছেন। কিন্তু আর সম্ভব হচ্ছে না। হঠাৎই নিজের স্ত্রীর কথা মনে পড়ে যায় দানিশের। রুহিকে কথাটা বলার পর এককথায় তিনি রাজি হয়ে যান।

পরদিনই স্কুলে গিয়ে পড়াতে শুরু করেন রুহি। তিনি বুঝতে পারেন,শিক্ষার্থীদের অনেকেই পড়াশোনায় ভীষণ আগ্রহী এবং বুদ্ধিমান। খুব সহজেই তারা সব কিছু শিখে ফেলছিল।

তবে হাতে খুব একটা সময় ছিল না। রুহি লক্ষ করছিলেন, মেধা থাকলেও তাদের অনেক সাধারণ বিষয় অজানা ছিল। অষ্টম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পদার্থবিদ্যার প্রতিটা বেসিক বিষয় তাদের বোঝাতে শুরু করেন রুহি। প্রজেক্টর দিয়ে বিভিন্ন মডেল দেখিয়ে যতটা পেরেছেন সহজ করে তাদের বুঝিয়েছেন।

ক্লাস টেস্টে ভাল রেজাল্ট করলেই রুহি তাদের চকোলেট দিতেন। এতে তাদের আগ্রহ আরও বেড়েছিল। ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও খোলেন তিনি। রাত দুটোতেও যদি কোনো শিক্ষার্থী সমস্যার কথা জানাত, রুহি তখনই সমাধান করতেন।

স্কুল রুহিকে ৪০ হাজার টাকা পারিশ্রমিক দিতে চেয়েছিল। কিন্তু রুহি সেই টাকা না নিয়ে স্কুল ফান্ডে দান করেন। দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় অসম্ভব ভালো ফলাফল করে শিক্ষার্থীরা। তার আগের বছর যেখানে মাত্র ১৭ জন শিক্ষার্থী (২১ শতাংশ) পাস করেছিল, রুহির চেষ্টায় ওই বছর ৯২ পড়ুয়ার মধ্যে ৭৪ জনই পাস করে।

মন্তব্য করতে পারেন...

comments


deshdiganto.com © 2019 কপিরাইট এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত

design and development by : http://webnewsdesign.com