গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার সুযোগ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানালেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রীর ‘হস্তক্ষেপেই’ এই সুযোগ তৈরি হয়েছে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ বলছেন, অনেক দেশ তাদের কাছে এই কিট পরীক্ষার জন্য নিতে চাইলেও দিচ্ছেন না। তিনি চান বাংলাদেশেই সবার আগে এই পরীক্ষাটা হোক। তবে এরইমধ্যে এক অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) প্রতিনিধির হাতে এই কিট তুলে দিয়েছেন জাফরুল্লাহ ও তার সহকর্মীরা।
রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে নাগরিক ঐক্যের উদ্যোগে ‘কোভিড-১৯: বৈশ্বিক মহামারী এবং বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ বিষয়ে কথা বলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, “আমাদের আহামরি কিছু না, আমরা মহাআবিষ্কার কিছু করি নাই। আমরা জানা কথাটাকে বলেছি সেটাকে কাগজে কলম ধরে। বাংলাদেশের পাঁচজন বিজ্ঞানী বিজন কুমার শীল, ফিরোজ আহমেদ, নিহাদ আদনান, মোহাম্মদ রাইদ জমিরুদ্দিন, মুহিবউল্লাহ খোন্দকার- এরা সব বাংলাদেশি। এরা এমন একটা জিনিস আবিষ্কার করেছেন তার জন্য কাউকে ঢাকায় আসার দরকার নেই। ইউনিয়নে যে পাঁচ হাজার সেন্টার আছে ওখানে বসে পরীক্ষা করা যাবে, ডাক্তারের চেম্বারে পরীক্ষা করা যাবে।
“ওই যে আমলাতন্ত্র ওটাকে না কমাতে পারলে…। আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) ধন্যবাদ দেই। যেই কারণে আপনার হস্তক্ষেপের জন্যই শেষ পর্যন্ত উদ্ভাবিত কিটটা পরীক্ষার দরজা পর্যন্ত যেতে পেরেছে।”
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, “এখন আমরা বিএসএমএমইউর ভাইস চ্যান্সেলর সাহেবের কাছে আবেদন করছি যে, আপনারা দ্রুত পরীক্ষা করেন, নিরপেক্ষভাবে পরীক্ষা করেন। ভালো হলে বলেন, খারাপ হলেও বলেন। আমাদের কোনো আপত্তি নাই। আমরা জানি, আমরা পরীক্ষায় পাস করব। কারণ এটার গবেষণা আমরা ভালোভাবে করেছি।
“সারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আজকে বলছে, আমাদেরকে দাও, আমরা পরীক্ষা করে দেখি তোমার এটাকে (কিট)। কিন্তু আমার কাছে আমার দেশ পরীক্ষা করার আগে বাইরে করতে আমার আত্মসম্মানে লাগে। যে দেশের জন্য আমি যুদ্ধ করেছি, যে মুক্তিযুদ্ধের ফসল এই দেশ সেখানে তার নিজের আত্মাসম্মানবোধ আছে। সেই কারণেই আমার চাওয়া অন্য কারও বিষয়ে রাজি না হওয়ার আগে বাংলাদেশ দেখুক।”
গত ২৫ এপ্রিলের ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের ডাকা হলেও তারা যাননি। এ নিয়ে জাফরুল্লাহ উচ্চকণ্ঠ হলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আগে কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার কথা বলা হয়।
পরে গত ৩০ এপ্রিল ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে চিঠি পাঠিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) বা আইসিডিডিআর,বিতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ওই টেস্টিং কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার কথা বলা হয়।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শওকত মাহমুদ, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা মুনির হোসেন কাশেমী, খেলাফত মজলিশের মাওলানা মাহবুবুল হক, এবি পার্টির অবসরপ্রাপ্ত মেজর আব্দুল ওহাব মিনার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের ভিপি নুরুল হক নূর, অধ্যক্ষ লিয়াকত আলী প্রমুখ।
deshdiganto.com © 2019 কপিরাইট এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত
design and development by : http://webnewsdesign.com