আপডেট

x


নামগঞ্জের ৭ উপজেলায় বন্যার অবনতি, বাড়ছে দুর্ভোগ

শনিবার, ১৩ জুলাই ২০১৯ | ১১:৪৮ অপরাহ্ণ | 333 বার

নামগঞ্জের ৭ উপজেলায় বন্যার অবনতি, বাড়ছে দুর্ভোগ

সুনামগঞ্জের ৭ উপজেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সরকারি হিসেবে প্রায় ১৩ হাজার পরিবার পানিবন্দী হওয়ার কথা বলা হলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন অন্তত ৪০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। পানিবন্দী নিম্ন আয়ের মানুষদের কাঁচা ঘরবাড়ি বিনষ্ট হচ্ছে। চারদিকে ঢল ও বানের পানির বিস্তারের কারণে কৃষকরা গবাদিপশুর খাদ্য নিয়ে বিপাকে আছেন।

ঢল ও বর্ষণের পানি উজান থেকে এখন নিম্নাঞ্চলে গিয়ে চাপ সৃষ্টি করায় মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। বিভিন্ন এলাকায় নলকূপ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, সুনামগঞ্জ পয়েন্টে শনিবার সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৮৮ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৫ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। দিনে সুরমা নদীসহ সীমান্ত নদীর পানি কিছুটা কমলেও রাতভর বৃষ্টি হলে আবারও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন।



এদিকে উজানের পানি এখন নিম্নাঞ্চলে নেমে ঘরবাড়ি, হাটবাজার, মাঠ প্লাবিত করছে। নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। শনিবার সুনামগঞ্জ-জামালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ -বিশ্বম্ভরপুর, সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর এবং সুনামগঞ্জ-দোয়ারাবাজার সড়কের বিভিন্ন অংশ ডুবে থাকায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। জেলা সদরের সঙ্গে উত্তরের চারটি ইউনিয়নের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ধারারগাঁও কালভার্ট ও সড়ক ভেঙ্গে এই দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।

ঢল ও বৃষ্টিতে উপজেলাগুলোর প্রধান সড়ক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনো ২৩৮ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি রয়েছে। ১৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং সেখানে বানভাসি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমান। ফ্লাড সেন্টার হিসেবে নির্মিত বাকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খোলা রাখার নির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এদিকে দুর্যোগে ক্ষয়-ক্ষতি ও দুর্ভোগ কমাতে জেলা প্রশাসনের আহ্বানে প্রতিটি মসজিদে মন্দিরে শুক্রবার বিশেষ প্রার্থনা হয়েছে। পানিবন্দি এলাকায় স্বাস্থ্য বিভাগ ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ স্যালাইন বিতরণ করছে বলে জানানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশা উপজেলার বন্যাক্রান্ত প্রায় ১৩ হাজার পরিবারকে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য স্থানেও দুর্গতদের ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। ত্রাণের আরো চাহিদা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও এখনো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ৬টি উপজেলায় বন্যাক্রান্তদের মধ্যে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বন্যাশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে তালিকাভুক্ত সবকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উঁচু অঞ্চল থেকে পানি নেমে এখন নিচের এলাকাগুলোকে প্লাবিত করছে। পানিবন্দী মানুষের নিরাপদ পানির জন্য পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ খাবার স্যালাইন বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক ভূঁইয়া বলেন, শুক্রবার পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণ কিছুটা কম ছিল। যার ফলে প্রধান নদী সুরমাসহ অন্যান্য নদীর পানিও কিছুটা কমেছে। তবে এই পানি নিম্নাঞ্চলে গিয়ে এখন চাপ তৈরি করছে। ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হবে। আরো ২ দুই দিন বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।

মন্তব্য করতে পারেন...

comments

deshdiganto.com © 2019 কপিরাইট এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত

design and development by : http://webnewsdesign.com