ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
কুলাউড়া বিএনপির দীর্ঘ যুগ পর কোন্দলের অবসান। ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার আবু জাহেলদের ব্যার্থ গুপ্ত হত্যা পরিকল্পনার মধ্যে দিয়েই যেভাবে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হিজরত জীবনের শুরু হয় তারেক রহমানের উপস্থাপিত ৩১ দফা’র লিফলেট বিতরন করলো পর্তুগাল সেচ্চাসেবক দল ইতালির তরিনোতে জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ব্রাম্মণবাড়ীয়া জেলা সমিতির অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন আমাদের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা নিয়ে ঝুঁকি তৈরি হলে আমরা সারা দুনিয়া জ্বালিয়ে দেব,মিলানের সেমিনারে বললেন পিনাকী ভট্রাচার্য পর্তুগাল জাসাস’র নবগঠিত কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলতেবিভিন্ন চক্রান্তে লিপ্ত আ’লীগ গ্রিন সিলেট ট্রাভেলসের আয়োজনে বাংলাদেশে পর্তুগাল দূতাবাস/কনসুলেট চেয়ে খোলা চিঠি স্বৈরাচার সরকার পতনের পর যুক্তরাজ্যে ফিরছেন সিলেট আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপি পর্তুগাল শাখার উদ্যোগে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত! বন্যার্ত মানুষের ত্রান তহবিলের জন্যে ৬ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘোষণা

নাটোরের ঐতিহ্যবাহী দিঘাপাতিয়া রাজবাড়ী বা উত্তরা গণভবন

তুহিন আহমদ পায়েল:
  • আপডেটের সময় : ০১:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুলাই ২০১৭
  • / ৩১৬০ টাইম ভিউ

পাখির নীড়ের মত দুটি চোখ তোমার ঠিক যেন নাটোরের বনলতা সেন। রাজা রানীর শহর, চলনবিলের শহর, কাঁচাগোল্লার শহর, বনলতার শহর ইতিহাস, ঐতিহ্যের শহর বনলতাসেনের নাটোর। নাটোর ঘুরে এসেছেন কিন্তু সময়ের অভাবে যারা ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক উত্তরা গণভবন দেখতে পারেন নাই তাদের জন্য আমার এ সল্প প্রয়াস।

দিঘাপাতিয়া রাজবাড়ি বা উত্তরা গণভবন নাটোর শহর থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে দিঘাপাতিয়া মহারাজাদের বাসস্থান বা বর্তমান উত্তরা গণভবন।
সাড়ে ৪১ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত প্রাসাদটি পরিখা ও উচু প্রাচীর ঘেরা। প্রাসাদের পূর্বপাশে পিরামিড আকৃতির চারতলা প্রবেশদ্বার রয়েছে যা উপরের দিকে সরু হয়ে গেছে এবং এর উপরে একটি ঘড়িও রয়েছে। মধ্যযুগীয় বাংলাদেশের অন্যান্য সামন্ত প্রাসাদের মতোই নাটোরের রাজবাড়ীতে রয়েছে দীর্ঘ প্রবেশ পথ যার দু ধারে বোতল পামের সুবিন্যাস লনীয়। প্রায় তিনশত বছরের প্রাচীন ঐতিহাসিক ঐতিহ্যবাহী দিঘাপাতিয়া রাজবাড়ীটি নাটোরের উত্তরা গণভবন নামে পরিচিত। দিঘাপতিয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন দয়ারাম রায়। তিনি নাটোরের রাজা-মহারাজ রামজীবনের একান্ত অণুগত একজন দেওয়ান ছিলেন।
প্রাসাদের মূল অংশ এবং সংলগ্ন কিছু ভবন নির্মাণ করেছিলেন রাজা দয়ারাম রায়। প্রসাদের ভিতর বহু প্রাচীন ও দুর্লভ প্রজাতির গাছের সমাবেশ ও সমারোহ। ঢাকার জাতীয় স্মৃতিসৌধের শোভাবর্ধনকারী রোপণকৃত ফুল ব্রাউনিয়া ও ককেসিয়া এখানকারই। এছাড়া অন্যান্য বৃরে মধ্যে এখানে আছে রাজ-অশোক, সৌরভী, পরিজাত, বিভিন্ন দুর্লভ প্রজাতির ফলজ ও ঔষধি বৃ। প্রাসাদের মধ্যে পরিখা বা লেকের পাড়ে এসব বৃাদির মহাসমারোহ। ভেতরে বিশাল মাঠ ও গোলাপ বাগান একপাশে গণপূর্ত অফিস। বিশাল রাজদরবার সংলগ্ন বাগানে জমিদার দয়ারামের একটি ভাস্কর্য তার স্মৃতিচারণ প্রতীক। প্রাসাদের মধ্যে একটি মিলনায়তন ভবনসহ রযেছে আরো দুইটি ভবন। গাড়ি পার্ক করার গ্যারেজ আলাদা। প্রাসাদের ভেতর রয়েছে বিভিন্ন ব্যবহার্য জিনিসপত্র। ভবনের মধ্যে জাদুঘর, বহু দর্শনীয় স্মৃতিস্তম্ভ, ভাস্কর্য ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য বিদ্যমান। সে সময়কার চারটি কামান পরিলতি। এখানে রাণীর টি হাউসটি অতুলনীয়। প্রাচীন এই অবকাঠামোকে ঘিরে অজস্র আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, মেহগনি, পাম ও চন্দনাসহ দুর্লভ জাতের গাছ লাগানো।

DSC_1741

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর দিঘাপতিয়ার শেষ রাজা প্রতিভা নাথ রায় দেশ ত্যাগ করে চলে যান। এসময় থেকে দিঘাপতিয়া রাজবাড়ী পরিত্যাক্ত অবস্থায় থাকে। ১৯৬৫ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার রাজবাড়ীটি অধিগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালের তৎকালীন গভনর হাউসে রূপান্তরিত হয়। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান এটিকে উত্তরা গণভবন হিসেবে ঘোষণা দেন। তিনি ১৯৭২ সালের এই ভবনের মূল প্রাসাদের ভিতর মন্ত্রিসভার বৈঠক আহবান করেন। সেই থেকে ভবনটি ‘উত্তরা গণভবনের’ প্রকৃত মর্যাদা লাভ করে।
বর্তমানে এটি ২০ টাকা প্রবেশ মূল্যে দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অণুমতি সাপেে উন্মক্ত রয়েছে।

পোস্ট শেয়ার করুন

নাটোরের ঐতিহ্যবাহী দিঘাপাতিয়া রাজবাড়ী বা উত্তরা গণভবন

আপডেটের সময় : ০১:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুলাই ২০১৭

পাখির নীড়ের মত দুটি চোখ তোমার ঠিক যেন নাটোরের বনলতা সেন। রাজা রানীর শহর, চলনবিলের শহর, কাঁচাগোল্লার শহর, বনলতার শহর ইতিহাস, ঐতিহ্যের শহর বনলতাসেনের নাটোর। নাটোর ঘুরে এসেছেন কিন্তু সময়ের অভাবে যারা ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক উত্তরা গণভবন দেখতে পারেন নাই তাদের জন্য আমার এ সল্প প্রয়াস।

দিঘাপাতিয়া রাজবাড়ি বা উত্তরা গণভবন নাটোর শহর থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে দিঘাপাতিয়া মহারাজাদের বাসস্থান বা বর্তমান উত্তরা গণভবন।
সাড়ে ৪১ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত প্রাসাদটি পরিখা ও উচু প্রাচীর ঘেরা। প্রাসাদের পূর্বপাশে পিরামিড আকৃতির চারতলা প্রবেশদ্বার রয়েছে যা উপরের দিকে সরু হয়ে গেছে এবং এর উপরে একটি ঘড়িও রয়েছে। মধ্যযুগীয় বাংলাদেশের অন্যান্য সামন্ত প্রাসাদের মতোই নাটোরের রাজবাড়ীতে রয়েছে দীর্ঘ প্রবেশ পথ যার দু ধারে বোতল পামের সুবিন্যাস লনীয়। প্রায় তিনশত বছরের প্রাচীন ঐতিহাসিক ঐতিহ্যবাহী দিঘাপাতিয়া রাজবাড়ীটি নাটোরের উত্তরা গণভবন নামে পরিচিত। দিঘাপতিয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন দয়ারাম রায়। তিনি নাটোরের রাজা-মহারাজ রামজীবনের একান্ত অণুগত একজন দেওয়ান ছিলেন।
প্রাসাদের মূল অংশ এবং সংলগ্ন কিছু ভবন নির্মাণ করেছিলেন রাজা দয়ারাম রায়। প্রসাদের ভিতর বহু প্রাচীন ও দুর্লভ প্রজাতির গাছের সমাবেশ ও সমারোহ। ঢাকার জাতীয় স্মৃতিসৌধের শোভাবর্ধনকারী রোপণকৃত ফুল ব্রাউনিয়া ও ককেসিয়া এখানকারই। এছাড়া অন্যান্য বৃরে মধ্যে এখানে আছে রাজ-অশোক, সৌরভী, পরিজাত, বিভিন্ন দুর্লভ প্রজাতির ফলজ ও ঔষধি বৃ। প্রাসাদের মধ্যে পরিখা বা লেকের পাড়ে এসব বৃাদির মহাসমারোহ। ভেতরে বিশাল মাঠ ও গোলাপ বাগান একপাশে গণপূর্ত অফিস। বিশাল রাজদরবার সংলগ্ন বাগানে জমিদার দয়ারামের একটি ভাস্কর্য তার স্মৃতিচারণ প্রতীক। প্রাসাদের মধ্যে একটি মিলনায়তন ভবনসহ রযেছে আরো দুইটি ভবন। গাড়ি পার্ক করার গ্যারেজ আলাদা। প্রাসাদের ভেতর রয়েছে বিভিন্ন ব্যবহার্য জিনিসপত্র। ভবনের মধ্যে জাদুঘর, বহু দর্শনীয় স্মৃতিস্তম্ভ, ভাস্কর্য ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য বিদ্যমান। সে সময়কার চারটি কামান পরিলতি। এখানে রাণীর টি হাউসটি অতুলনীয়। প্রাচীন এই অবকাঠামোকে ঘিরে অজস্র আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, মেহগনি, পাম ও চন্দনাসহ দুর্লভ জাতের গাছ লাগানো।

DSC_1741

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর দিঘাপতিয়ার শেষ রাজা প্রতিভা নাথ রায় দেশ ত্যাগ করে চলে যান। এসময় থেকে দিঘাপতিয়া রাজবাড়ী পরিত্যাক্ত অবস্থায় থাকে। ১৯৬৫ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার রাজবাড়ীটি অধিগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালের তৎকালীন গভনর হাউসে রূপান্তরিত হয়। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান এটিকে উত্তরা গণভবন হিসেবে ঘোষণা দেন। তিনি ১৯৭২ সালের এই ভবনের মূল প্রাসাদের ভিতর মন্ত্রিসভার বৈঠক আহবান করেন। সেই থেকে ভবনটি ‘উত্তরা গণভবনের’ প্রকৃত মর্যাদা লাভ করে।
বর্তমানে এটি ২০ টাকা প্রবেশ মূল্যে দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অণুমতি সাপেে উন্মক্ত রয়েছে।