দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্কঃ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তথ্য-প্রযুক্তি (আইসিটি) কোর্স চালুর ব্যাপারে সরকার আন্তরিক বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। রোববার জাতীয় সংসদে সরকার দলীয় সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান মন্ত্রী।শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তথ্য-প্রযুক্তি (আইসিটি) কোর্স চালু ও সেখানে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে সরকার আন্তরিক। যেখানে কোর্স চালু হওয়ার পরও শিক্ষক নেই, সেখানে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সরকার দলের সদস্য মুহাম্মদ শফিকুর রহমানের লিখিত প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয়টি সংসদ সদস্যের চাহিদার প্রেক্ষিতে উন্নয়ন তালিকাভূক্ত করে নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা যেতে পারে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১০টি নির্বাচিত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এবং ৪টি নির্বাচিত মাদ্রাসায় একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি ভবনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ডা. রুস্তম আলী ফরাজী ও আওয়ামী লীগের সদস্য পংকজ দেবনাথের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে ডা. দীপু মনি সংসদে জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্তির দাবি গত সংসদে আমারও ছিলো। মন্ত্রণালয় এবিষয়ে কাজ করছে। ইতোমধ্যে এমপিওভূক্তির জন্য অনলাইনে আবেদন চাওয়া হয়েছে। আবেদনপত্র জমাও হয়েছে। এখন তালিকা তৈরির কাজ চলছে। দ্রুত তালিকা তৈরির কাজ শেষ করে পর্যায়ত্রমে এমপিওভূক্ত করা হবে। অর্থসংস্থান অনুযায়ী এই মুহর্তে যতোগুলো সম্ভব, ততোগুলো করা হবে। এদিকে এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে প্রশ্নপত্র বিতরণে কেলেংকারির ঘটনায় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির এমপিরা। জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ওই ঘটনার জন্য দায়ীদের ইতোমধ্যে সরিয়ে দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এঘটনায় কোন শিক্ষার্থী যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু শিক্ষা মন্ত্রীর কাছে জানতে চান, কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে ভিন্ন প্রশ্নে নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। যা তাদের শিক্ষা জীবনের উপর প্রভাব ফেলবে। এবিষয় মন্ত্রণালয় কি ব্যবস্থা নিয়েছে?
জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সারাদেশে এসএসসি পরীক্ষার প্রায় ৪ হাজার কেন্দ্র রয়েছে। এরমধ্যে কয়েকটি কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্র সচিবসহ যাদের ভুলের কারণে এটা ঘটেছে, ইতোমধ্যে তাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর দায়ি সকলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, প্রথম দিনে যারা ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়েছে, তাদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা যাতে কোন ভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সে জন্য তাদের খাতা ভিন্নভাবে দেখা হবে। আগামীতে যাতে এ ধরণের ঘটনা না ঘটে সেবিষয়েও সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান, জাতীয় পার্টির আরেক সদস্য মো. ফখরুল ইমাম সম্পূরক প্রশ্নের সুযোগ নিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রী নৈতিকতা বিরোধী বক্তব্য দিলেন। যারা ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়েছেন তাদের কোন মানদন্ডে নম্বর দিবেন। সিলেবাসের বাইরের প্রশ্নে তারা পরীক্ষায় কি লিখলো? তারা না লিখলেও কি নম্বর দিবেন? বরং তাদের সিলেবাসে নতুন প্রশ্নে তাদের আবরো পরীক্ষা নেওয়া যায় কিনা?
জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি বলেন, নতুন করে পরীক্ষা নিলেও তো একই মানদন্ড নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। কারণ আগের যে প্রশ্নে অন্যরা পরীক্ষা দিয়েছে, একই প্রশ্নে আবারো পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ নেই। আর নতুন প্রশ্ন করলে তো আলাদাই হলো। তবে, সমাধান কি? এ বিষয়ে যুক্তিযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য বিকল্প কোন প্রস্তাব থাকলে তা মন্ত্রণালয়কে জানানোর অনুরোধ জানান তিনি।
deshdiganto.com © 2019 কপিরাইট এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত
design and development by : http://webnewsdesign.com