ঢাকা , শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
পর্তুগালে মানবিক সেচ্ছাসেবী সংগঠন “সদিচ্ছা ফাউন্ডেশন” এর লোগো সম্বলিত টি শার্ট উন্মোচন যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালন করেছে দূতাবাস রোম পর্তুগাল জাসাসের আলিসবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মিলানের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস পালিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা করেছে সম্মিলিত নাগরিক কমিটি ভেনিস বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মনফালকনে গরিঝিয়া শাখা ইতালির আয়োজনে বাংলাদেশের ৫৩ তম বিজয় দিবস উদযাপন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত রোমে সিলেট বিভাগ জাতীয়তাবাদী যুবদল গঠন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা প্রবাসীদের নিয়ে পঞ্চগ্রাম প্রবাসী উন্নয়ন ফোরামের ৭৭ বিশিষ্ট কমিটি গঠন সুয়েব এবং রুবিয়াত আফরিনা ১৮তম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করেছেন অ্যামাজন জঙ্গলে

তামিলনাড়ুর ৩ হাজার দলিতের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ঘোষণা

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : ০৭:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯
  • / ৩২৮ টাইম ভিউ

ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের প্রায় ৩ হাজার দলিত সম্প্রদায়ের লোকজন ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী ৫ জানুয়ারি তারা আনুষ্ঠানিকভাবে মুসলিম হবেন। তামিল পুলিগাল নামে একটি সংগঠন এ ঘোষণা দিয়েছে। খবর দ্য প্রিন্ট ও ইন্ডিয়া টুডের।

প্রাচীর ধসে নিহত ১৭ দলিতের বিচার চেয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে সংগঠনটি। বিচার না পেয়ে তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খবরে বলা হয়, ডিসেম্বরের শুরুর দিকে অতিবৃষ্টিতে তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোর জেলার মেট্টুপাল্যাম এলাকায় ২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২ ফুট প্রস্থের একটি প্রাচীর ধসে ১১ নারী ও ৩ শিশুসহ ১৭ জন নিহত হন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দলিত সম্প্রদায়ের কেউ যাতে তার জমিতে না যেতে পারে, সেজন্য ‘বৈষম্যের’ এ প্রাচীর নির্মাণ করেন এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪-এ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। পরে জামিনে মুক্তি পান তিনি।

এ ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন দলিত সম্প্রদায়ের লোকজন। সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে তারা মিছিল করেন। সে মিছিল থেকে তামিল পুলিগাল সংগঠনের সভাপতিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকে ওই ব্যক্তি কারাগারেই রয়েছেন। এ ঘটনা দলিত সম্প্রদায়ের মনে চরম রেখাপাত করেছে। তারা বলেন, প্রাচীর নির্মাণের সময়ই এর বিরোধিতা করেছিলেন। আশঙ্কা করছিলেন এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ দেয়ালটির স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন ছিল। কিন্তু প্রশাসন তাদের কথায় কোনো কর্ণপাত করেনি। অতীতে বিভিন্ন অভিযোগ করেও তারা কোনো প্রতিকার পাননি।

তামিলনাড়ুর দলিত সম্প্রদায়ের অধিকার নিয়ে কাজ করা তালিম পুলিগাল কাচির (টিপিকে) সাধারণ সম্পাদক এম ইলাভেনিল বলেন, আমরা দশকের পর দশক ধরে বৈষম্যের শিকার। অনেক হয়েছে আর নয়। আমরা এবার ধর্ম পরিবর্তন করব। প্রাচীর ধস সে সুযোগ করে দিয়েছে। কেন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি তা এখন সবাই জানে। একটি ধর্ম যদি আমাদের জীবনের মূল্যই না দিতে পারল, তাহলে আমরা কেন নিজেদের শুধু শুধু বিসর্জন দিয়ে যাব- প্রশ্ন দলিত সম্প্রদায়ের এ নেতার।

বলেন, ‘যে ব্যক্তি এ মর্মান্তিক ঘটনার জন্য দায়ী তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হলো। সংগঠনের সভাপতি নাগাই তিরুভল্লুয়ান গণতান্ত্রিক উপায়ে ন্যায়বিচার চাইতে গেলে তাকে আটক করা হয়।’

বর্ণহিন্দুদের দ্বারা নিপীড়নে অতিষ্ঠ সেখানকার দলিতরা। ইলাভেনিল বলেন, নিপীড়ন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, আমাদেরকে কূপ থেকে পানি খেতে দেয় না। আমরা মন্দিরের ধারেকাছে যেতে পানি না। রাস্তায় ধরে মারধর করে আবার মামলাও দেয়। আমাদেরকে বলা হয়েছে, রাস্তায় যেন মোবাইল ফোনে কথা না বলি। কী ধরনের অমানবিক আচরণ এগুলো?’

টিপিকের সদস্য তালিমনাড়ুর সালেম জেলার বাসিন্দা রণজিত বলেন, ধাপে ধাপে আমাদের তিন হাজার সদস্য ইসলাম গ্রহণ করবেন। ৫ জানুয়ারি প্রথমদিন ২০০ জন ধর্ম পরিবর্তন করবেন। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। আমাদের প্রায় তিন হাজার সদস্য মুসলমান হতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। প্রথমেই মুসলমান হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন সুরেশ কুমার।

এ বিষয়ে তার বক্তব্য, আমরা আশা করছি, দলিত দাগটা একবার দূর হলেই সব ধরনের বৈষম্য কমে যাবে। তাই প্রথমে আমিই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করব। তারপর আমার পরিবার।

পোস্ট শেয়ার করুন

তামিলনাড়ুর ৩ হাজার দলিতের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ঘোষণা

আপডেটের সময় : ০৭:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯

ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের প্রায় ৩ হাজার দলিত সম্প্রদায়ের লোকজন ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী ৫ জানুয়ারি তারা আনুষ্ঠানিকভাবে মুসলিম হবেন। তামিল পুলিগাল নামে একটি সংগঠন এ ঘোষণা দিয়েছে। খবর দ্য প্রিন্ট ও ইন্ডিয়া টুডের।

প্রাচীর ধসে নিহত ১৭ দলিতের বিচার চেয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে সংগঠনটি। বিচার না পেয়ে তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খবরে বলা হয়, ডিসেম্বরের শুরুর দিকে অতিবৃষ্টিতে তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোর জেলার মেট্টুপাল্যাম এলাকায় ২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২ ফুট প্রস্থের একটি প্রাচীর ধসে ১১ নারী ও ৩ শিশুসহ ১৭ জন নিহত হন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দলিত সম্প্রদায়ের কেউ যাতে তার জমিতে না যেতে পারে, সেজন্য ‘বৈষম্যের’ এ প্রাচীর নির্মাণ করেন এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪-এ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। পরে জামিনে মুক্তি পান তিনি।

এ ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন দলিত সম্প্রদায়ের লোকজন। সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে তারা মিছিল করেন। সে মিছিল থেকে তামিল পুলিগাল সংগঠনের সভাপতিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকে ওই ব্যক্তি কারাগারেই রয়েছেন। এ ঘটনা দলিত সম্প্রদায়ের মনে চরম রেখাপাত করেছে। তারা বলেন, প্রাচীর নির্মাণের সময়ই এর বিরোধিতা করেছিলেন। আশঙ্কা করছিলেন এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ দেয়ালটির স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন ছিল। কিন্তু প্রশাসন তাদের কথায় কোনো কর্ণপাত করেনি। অতীতে বিভিন্ন অভিযোগ করেও তারা কোনো প্রতিকার পাননি।

তামিলনাড়ুর দলিত সম্প্রদায়ের অধিকার নিয়ে কাজ করা তালিম পুলিগাল কাচির (টিপিকে) সাধারণ সম্পাদক এম ইলাভেনিল বলেন, আমরা দশকের পর দশক ধরে বৈষম্যের শিকার। অনেক হয়েছে আর নয়। আমরা এবার ধর্ম পরিবর্তন করব। প্রাচীর ধস সে সুযোগ করে দিয়েছে। কেন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি তা এখন সবাই জানে। একটি ধর্ম যদি আমাদের জীবনের মূল্যই না দিতে পারল, তাহলে আমরা কেন নিজেদের শুধু শুধু বিসর্জন দিয়ে যাব- প্রশ্ন দলিত সম্প্রদায়ের এ নেতার।

বলেন, ‘যে ব্যক্তি এ মর্মান্তিক ঘটনার জন্য দায়ী তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হলো। সংগঠনের সভাপতি নাগাই তিরুভল্লুয়ান গণতান্ত্রিক উপায়ে ন্যায়বিচার চাইতে গেলে তাকে আটক করা হয়।’

বর্ণহিন্দুদের দ্বারা নিপীড়নে অতিষ্ঠ সেখানকার দলিতরা। ইলাভেনিল বলেন, নিপীড়ন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, আমাদেরকে কূপ থেকে পানি খেতে দেয় না। আমরা মন্দিরের ধারেকাছে যেতে পানি না। রাস্তায় ধরে মারধর করে আবার মামলাও দেয়। আমাদেরকে বলা হয়েছে, রাস্তায় যেন মোবাইল ফোনে কথা না বলি। কী ধরনের অমানবিক আচরণ এগুলো?’

টিপিকের সদস্য তালিমনাড়ুর সালেম জেলার বাসিন্দা রণজিত বলেন, ধাপে ধাপে আমাদের তিন হাজার সদস্য ইসলাম গ্রহণ করবেন। ৫ জানুয়ারি প্রথমদিন ২০০ জন ধর্ম পরিবর্তন করবেন। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। আমাদের প্রায় তিন হাজার সদস্য মুসলমান হতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। প্রথমেই মুসলমান হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন সুরেশ কুমার।

এ বিষয়ে তার বক্তব্য, আমরা আশা করছি, দলিত দাগটা একবার দূর হলেই সব ধরনের বৈষম্য কমে যাবে। তাই প্রথমে আমিই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করব। তারপর আমার পরিবার।