তাদের পদত্যাগ করা উচিত মাহমুদুর রহমান মান্না
- আপডেটের সময় : ০১:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ অগাস্ট ২০১৯
- / ৩০৮ টাইম ভিউ
দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্কঃ নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, সরকার এখন পর্যন্ত মশা মারার কার্যকর ওষুধ আমদানি করতে পারছে না। এই ভয়াবহ ব্যর্থতার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও দুই সিটি কাপোরেশনের মেয়রের এখনই পদত্যাগ করা উচিত। তারা কার্যকর ওষুধ না এনে মশা মারার নাটক করে বেড়াচ্ছে। কেউ মাটিতে ঝাড়ু দিচ্ছেন, যেন ডেঙ্গু মশা বা লার্ভা মাটির ওপর আছে। আসলে তাদের ছবি তোলার একটা পাঁয়তারা। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয় মুক্তিমঞ্চ ‘দেশের সার্বিক বিরাজমান পরিস্থিতি- উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ ইবরাহিম বীরপ্রতীকের সভাপতিত্বে গোলটেবিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম। সাবেক সচিব মোফাজ্জল করিম, ডা. এ কে এম ওয়ালিউল্লাহ, এলডিপি মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ প্রমুখ এতে বক্তব্য দেন। মাহমুদুর রহমান মান্না আরও বলেন, ডেঙ্গুর ব্যাপারে আগাম সতর্কতা হিসেবে হাই কোর্ট সিটি করপোরেশনকে গত ফেব্রুয়ারিতে নোটিস দিয়েছিল। মার্চে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঢাকার দুই সিটিকে সতর্ক করেছিল। কিন্তু কোনো কিছুতেই ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই আজকের এই মহামারি। সরকারের হিসেবেই প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরেই ডেঙ্গু এ দেশে রয়েছে। ২০১৫ থেকে এটি বেড়েছে। এ দীর্ঘ সময়ে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু মহামারির রূপ নিয়েছে। সরকার চাইবে না এটি স্বীকার করতে। সরকার সব সময় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কম দেখায়। কারণ স্বীকার করলে তাদের অনেক কিছু স্বীকার করতে হবে। এসব স্বীকার করলে তাদের নিজেদের অস্তিত্ব থাকে না। ডেঙ্গুর বিস্তারের ফলে দেশ এখন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে আছে। দেশের সব কটি জেলা এখন ডেঙ্গু আক্রান্ত। গত কয়েক দিনে এ রোগে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। অথচ আমরা দেখেছি কেউ কেউ বলে বেড়িয়েছেন যে, এর সঙ্গে বিরোধী দল জড়িত।
মান্না বলেন, সিনেমার তারকা, মন্ত্রী মশা মারার নাটক করে বেড়াচ্ছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিদেশে গিয়েছিলেন। এই রকমের বিস্ময়কর মন্ত্রী আমরা আগে দেখেনি। এই রকম মূর্খ, অকালকুষ্মা , কাজ করতে পারে না শুধু কথা বলে। এ রকম যারা ক্ষমতায় আছেন তাদের হাতে তো দেশটা নিরাপদ নয়। আমরাও নিরাপদ নই। ওষুধ কেনার জন্যও নাকি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা লাগে। তাহলে মন্ত্রীরা কী কাজ করে। ডেঙ্গুর সিজনের আরও তিনমাস বাকি আছে। সেপ্টেম্বরে হবে এর সর্বোচ্চ পর্যায়। এমন চললে কী হবে? দেশের অর্ধেকের বেশি জেলা বন্যায় আক্রান্ত। বন্যার পানি নামলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. অলি আহমদ বলেন, দেশ স্বাধীন হলেও জনগণ স্বাধীন হয়নি। নিজেদের ক্ষুদ্রস্বার্থ বাদ দিয়ে জনগণকে বাঁচানোর জন্য কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ব্যাংকে টাকা নেই, শেয়ারবাজার লুটপাট হয়ে গেছে, ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা নেই, মশা মারার ওষুধ নেই। সবাইকে জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করতে হবে। আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত, দলীয়করণমুক্ত বাংলাদেশ গঠন করতে হবে।
তিনি বলেন, নিজেদের ক্ষুদ্র ব্যক্তিস্বার্থ ভুলে জনগণকে বাঁচানোর জন্য মুক্তিযুদ্ধে সময় যেভাবে এগিয়ে এসেছিলেন সেভাবে এগিয়ে আসতে হবে।