ঢাকা , রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলতেবিভিন্ন চক্রান্তে লিপ্ত আ’লীগ গ্রিন সিলেট ট্রাভেলসের আয়োজনে বাংলাদেশে পর্তুগাল দূতাবাস/কনসুলেট চেয়ে খোলা চিঠি স্বৈরাচার সরকার পতনের পর যুক্তরাজ্যে ফিরছেন সিলেট আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপি পর্তুগাল শাখার উদ্যোগে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত! বন্যার্ত মানুষের ত্রান তহবিলের জন্যে ৬ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘোষণা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বেজা শাখার কর্মি সম্মেলন অনুষ্ঠিত বিমানের নতুন চেয়ারম্যান কুলাউড়ার আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও ২৪ কোটা আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা দোয়া মাহফিল পর্তুগালে রাজনগর প্রবাসী ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আত্মপ্রকাশ পর্তুগাল বিএনপি’র আয়োজনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্বরণে দোয়া ও মাহফিল সম্পন্ন বিমূর্ত সব মুর্হুতরা, আমার মা’য়ের সাথের শেষ শনিবার – শাহারুল কিবরিয়া

ট্রাকচালক ফারুক পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী পদক!

দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্কঃ
  • আপডেটের সময় : ১২:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০১৯
  • / ৭১৬ টাইম ভিউ

দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্কঃ  সংসারের অভাব-অনটনের জন্য বেশিদূর পড়ালেখা করতে পারেননি। অষ্টম শ্রেণি পাশ করেই শ্রমিকের কাজে যোগ দেন। পরে ট্রাক চালানো শিখে হয়েছেন ট্রাকচালক।

কিন্তু শিক্ষার প্রতি অনুরাগের কারণে নিজের বেতনের ২৫ শতাংশ ব্যয় করেন অসহায়, দুঃস্থ ও শিক্ষাবঞ্চিত শিশুদের জন্য। নিজ বাড়ির আঙিনায় পরিচালনা করছেন বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রম।

শিক্ষাক্ষেত্রে এমন বিশেষ অবদানের জন্য এ বছর প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে প্রাথমিক শিক্ষা পদক নেবেন দিনাজপুরের ট্রাকচালক ফারুক হোসেন।

২০১৯ সালের জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহে সারাদেশে শ্রেষ্ঠ বিদ্যোৎসাহী সমাজকর্মী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ফারুক।

পদক প্রাপ্তদের বুধবার (১৩ মার্চ) ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদক তুলে দেবেন।

ফারুক হোসেনের বাড়ি দিনাজপুরের সদর উপজেলার কাশিমপুর (মালিপুকুর) গ্রামে। তার জন্ম ১৯৮৮ সালের ১২ মার্চ। সদর উপজেলার চেরাডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০২ সালে অষ্টম শ্রেণি পাশ করার পর অভাব অনটনের জন্য আর লেখাপড়ার সুযোগ হয়নি।

এরপর শহরের পুলহাট বিএডিসি’র বীজ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রে বস্তা টানার কাজ শুরু করেন। ২০০৭ সালে মাস্টাররোলে বিএডিসির ট্রাক সহকারী হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৭ সালে বিএডিসি’র রংপুর যুগ্ম-পরিচালকের দফতরে ট্রাক সহকারী হিসেবে স্থায়ী নিয়োগ পান।

শিক্ষানুরাগী ফারুক নিজে বিভিন্ন স্কুলে ও পাড়ায়-মহল্লায় গিয়ে হতদরিদ্র ও ঝরে পড়া শিশুদের খুঁজে বের করেন। তাদের লেখাপড়া যাতে বিঘ্নিত না হয় সেজন্য বেতনের ২৫ শতাংশ দিয়ে শিক্ষা উপকরণ কিনে বিতরণ করেন।

পাশাপাশি তিনি ও তার স্ত্রী সাবেরা আক্তার মিলে নিজ বাড়ির আঙিনায় গড়ে তুলেছেন বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র। এরই স্বীকৃতি আজ পেতে যাচ্ছেন তিনি।

ফারুক হোসেন বলেন, ‘দরিদ্র বাবা অর্থের জোগান দিতে না পারায় লেখাপড়া করতে পারিনি বেশি। তখনই পণ করেছিলাম আমার মতো কারও যাতে অর্থের অভাবে লেখাপড়া বন্ধ না হয় সেজন্য উপার্জনের একটা অংশ ব্যয় করবো শিক্ষাবঞ্চিত শিশুদের জন্য।

২০০৭ সাল থেকে এই কাজটি করে চলেছি। কোনও স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য নয়, হতদরিদ্র শিশুরা যাতে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয়-সেই চিন্তা থেকেই এটা করছি।’

পদক পাওয়ার বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ফারুককে চিঠি দিয়ে জানায়। তিনি বলেন, ‘কখনও কল্পনা করতে পারিনি এরকম কাজ করলে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেয়। কিছু চাওয়া-পাওয়ার আশায় এই কাজ করিনি।

এই স্বীকৃতি আমাকে আরও উৎসাহিত করবে। যতদিন শিক্ষা থেকে শিশুদের ঝরে পড়া বন্ধ হবে না। ততদিন আমার এই কাজ অব্যাহত থাকবে।’

পোস্ট শেয়ার করুন

ট্রাকচালক ফারুক পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী পদক!

আপডেটের সময় : ১২:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০১৯

দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্কঃ  সংসারের অভাব-অনটনের জন্য বেশিদূর পড়ালেখা করতে পারেননি। অষ্টম শ্রেণি পাশ করেই শ্রমিকের কাজে যোগ দেন। পরে ট্রাক চালানো শিখে হয়েছেন ট্রাকচালক।

কিন্তু শিক্ষার প্রতি অনুরাগের কারণে নিজের বেতনের ২৫ শতাংশ ব্যয় করেন অসহায়, দুঃস্থ ও শিক্ষাবঞ্চিত শিশুদের জন্য। নিজ বাড়ির আঙিনায় পরিচালনা করছেন বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রম।

শিক্ষাক্ষেত্রে এমন বিশেষ অবদানের জন্য এ বছর প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে প্রাথমিক শিক্ষা পদক নেবেন দিনাজপুরের ট্রাকচালক ফারুক হোসেন।

২০১৯ সালের জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহে সারাদেশে শ্রেষ্ঠ বিদ্যোৎসাহী সমাজকর্মী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ফারুক।

পদক প্রাপ্তদের বুধবার (১৩ মার্চ) ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদক তুলে দেবেন।

ফারুক হোসেনের বাড়ি দিনাজপুরের সদর উপজেলার কাশিমপুর (মালিপুকুর) গ্রামে। তার জন্ম ১৯৮৮ সালের ১২ মার্চ। সদর উপজেলার চেরাডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০২ সালে অষ্টম শ্রেণি পাশ করার পর অভাব অনটনের জন্য আর লেখাপড়ার সুযোগ হয়নি।

এরপর শহরের পুলহাট বিএডিসি’র বীজ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রে বস্তা টানার কাজ শুরু করেন। ২০০৭ সালে মাস্টাররোলে বিএডিসির ট্রাক সহকারী হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৭ সালে বিএডিসি’র রংপুর যুগ্ম-পরিচালকের দফতরে ট্রাক সহকারী হিসেবে স্থায়ী নিয়োগ পান।

শিক্ষানুরাগী ফারুক নিজে বিভিন্ন স্কুলে ও পাড়ায়-মহল্লায় গিয়ে হতদরিদ্র ও ঝরে পড়া শিশুদের খুঁজে বের করেন। তাদের লেখাপড়া যাতে বিঘ্নিত না হয় সেজন্য বেতনের ২৫ শতাংশ দিয়ে শিক্ষা উপকরণ কিনে বিতরণ করেন।

পাশাপাশি তিনি ও তার স্ত্রী সাবেরা আক্তার মিলে নিজ বাড়ির আঙিনায় গড়ে তুলেছেন বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র। এরই স্বীকৃতি আজ পেতে যাচ্ছেন তিনি।

ফারুক হোসেন বলেন, ‘দরিদ্র বাবা অর্থের জোগান দিতে না পারায় লেখাপড়া করতে পারিনি বেশি। তখনই পণ করেছিলাম আমার মতো কারও যাতে অর্থের অভাবে লেখাপড়া বন্ধ না হয় সেজন্য উপার্জনের একটা অংশ ব্যয় করবো শিক্ষাবঞ্চিত শিশুদের জন্য।

২০০৭ সাল থেকে এই কাজটি করে চলেছি। কোনও স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য নয়, হতদরিদ্র শিশুরা যাতে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয়-সেই চিন্তা থেকেই এটা করছি।’

পদক পাওয়ার বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ফারুককে চিঠি দিয়ে জানায়। তিনি বলেন, ‘কখনও কল্পনা করতে পারিনি এরকম কাজ করলে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেয়। কিছু চাওয়া-পাওয়ার আশায় এই কাজ করিনি।

এই স্বীকৃতি আমাকে আরও উৎসাহিত করবে। যতদিন শিক্ষা থেকে শিশুদের ঝরে পড়া বন্ধ হবে না। ততদিন আমার এই কাজ অব্যাহত থাকবে।’