কুলাউড়া বরমচালে ৪ টি আন্তঃনগর ট্রেন এক্সপ্রেস যাত্রা বিরতি আনন্দিত বরমচালবাসী
- আপডেটের সময় : ০১:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২০
- / ৬৩৫ টাইম ভিউ
দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হওয়ায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার বরমচাল ইউনিয়নের মানুষ আনন্দ উৎযাপন করছে। স্থানীয়রা কেউ কেউ মিষ্টি বিতরণ করছেন আবার কেউ কেউ একে অন্যকে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। স্থানীয়রা বলেন, দীর্ঘ দিন পর বরমচালে প্রাণ ফিরে এসেছে। একটি সবুজ অরণ্যে ঘেরা বরমচালে যেন কিছু একটার অভাব ছিলো, সেই অভাবটাই যেন পূরণ হয়েছে।
রেল কর্তৃপক্ষ সূত্র থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারী থেকে ঢাকা ও সিলেটগামী উপবন এক্সপ্রেস, চট্টগ্রামগামী উদয়ন ও সিলেটগামী পাহাড়িকা আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন বরমচাল স্টেশনে যাত্রা বিরতি করবে। খবরটি জানামাত্র বরমচালবাসী আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে একে অন্যকে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। তাঁদের উচ্ছ্বাসে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে ঐতিহ্যবাহি বরমচাল ইউনিয়ন।
বরমচালবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো অন্তত দুইটি আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির।
স্থানীয়দের মতে, দাবিটা ছিলো যৌক্তিক। কুলাউড়া রেল স্টেশন আর সিলেটের মাইজগাঁও রেল স্টেশনের মধ্যখানে ছিলো দীর্ঘ রেল পথ। এই মধ্যখানে অবস্থিত কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল, ভাটেরা, ভুকশিমইল, ব্রাহহ্মণবাজার ইউনিয়ন, রাজনগরের মুন্সিবাজার এলাকার আংশিক।
বিভিন্ন প্রয়োজনে দৈনিক কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত করে এখান থেকে। দেশের অন্যতম গ্যাস এর খনি, পেট্টো বাংলা, স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, চা-বাগান, রাবার বাগান-সহ বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এই অঞ্চলে অবস্থিত। কিন্তু যাতায়াতের জন্য একমাত্র সড়ক ছাড়া মানুষ অসহায়। তাই নানা বিরম্বনা, দুর্ভোগ কাটিয়ে বাধ্য হয়ে চলাচল করতে হতো এখানকার মানুষের। তাই এখানকার মানুষের প্রাণের দাবি ছিলো অন্তত দুই একটি আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি। যাতে করে মানুষ নিশ্চিন্তে, নিরাপদে দুরবর্তী স্থানে যাতায়াত করতে পারে সহজে।
স্থানীয় আব্দুর রউফ চৌধুরী তুতি, আনার উদ্দিন, সাংবাদিক কামাল হাসান, তাজ খান, হেলাল খান, আব্দুল জহুর ডেন, তাজুল ইসলাম সাইকুল, হুছনুল আমিন চৌধুরী ফাজু, এজাজ কবির দিপু, আবুল হোসেন খসরু জানান, ‘আমরা উচ্ছ্বসিত, আনন্দিত’। দাবি বাস্তবায়নে স্থানীয় বাসিন্দা সাংবাদিক সাইদুল হাসান সিপন, শাকির আহমদ উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলেন, ‘আমাদের দাবি পূরণ হয়েছে, এখন মানুষের কষ্ট লাগব হবে।’
বরমচাল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আহবাব চৌধুরী শাহজাহান বলেন, ‘বরমচালবাসীর দাবি পূরণ করায় মাননীয় রেলপথ মন্ত্রী মো নূরুল ইসলাম সুজন এবং বন ও পরিবেশ মন্ত্রী মো শাহাব উদ্দিন-সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি বরমচালের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইছহাক চৌধুরী ইমরান বলেন, ‘এটা ছিলো বরমচালের দীর্ঘ দিনের দাবি। প্রতিদিন শত শত মানুষ এই স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করে। কিন্তু আন্তঃনগর ট্রেনের অভাবে মানুষ কষ্ট করে যাতায়াত করতো। এখন তাঁদের সেই কষ্ট লাগব হবে।’
যাত্রাবিরতির তথ্য নিশ্চিত করে কুলাউড়া রেলওয়ে জংশনের টিআইটি নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আগামী ১০ জানুয়ারী থেকে এই যাত্রাবিরতি কার্যকর হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ২৩ জুন কুলাউড়ার বরমচাল এলাকায় দুর্ঘটনাকবলিত হয় ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেন উপবন। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন ৪ জন। আহত হন দুই শতাধিক যাত্রী। এরপর ২৬ জুন সেই দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শণ শেষে বরমচালের এক জনসভায় রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন, এমপি’র কাছে আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি চেয়ে একটি স্মারকলিপি তুলে দেন স্থানীয়রা। পরে তিনি তাঁর বক্তব্যে স্থানীয়দের দাবি মেনে নিয়ে ঘোষণা দেন, ‘সিলেট-ঢাকা, সিলেট-চট্টগ্রাম রুটের দুইটি আন্তঃনগর ট্রেন বরমচাল রেল স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে।’