মৌলভী বাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের মাহতাব পুর গ্রামের রবি দাশ এর বাড়ি হতে মুক্তিযাদ্ধা ইকবাল মিয়া’র বাড়ি পর্যন্ত একটি সড়কের ইট সলিং এর সড়ক নির্মাণের জন্য জেলা পরিষদ থেকে বিল পাস হয়ে আসে । সেই সড়কের ইট সলিং এর নির্মাণের জন্য আবেদন করেছিলেন হাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বাসিত বাচ্ছু নিজেই ।
বর্তমানে সেই সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু করতে গেলে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান হাজীপুরের চেয়ারম্যান ।
কাজটি অন্য সড়কে নিয়ে যেতে উঠে পড়ে লেগেছেন তিনি, আর এই ইসুৎ নিয়ে গ্রামে দুইটি অংশের মুখামুখি সংঘর্ষের অবস্হানে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন চেয়ারম্যান স্বউদ্যোগেই ।
উনার তৈরী ইসুৎ নিয়ে গত কয়েকদিন থেকে এই এলাকায় আতংন্ক বিরাজ করছে ।
হাজীপুর ইউনিয়নের মাহতাবপুর গ্রামের দুই রাস্তা নিয়ে দুই অংশের, একটি অংশের সরাসরি নেতৃত্ব দিতে বিডিও তে দেখা যায় চেয়ারম্যান আব্দুল বাসিত বাচ্ছু কে ।
যেখানে চেয়ারম্যান সমস্যার সমাধান দিবেন, সেখানে তিনি নিজেই এলাকায় দুই ভাগে বিভক্ত করে সমস্যার সৃষ্টি করছেন ।
তার কারন খোঁজতে গিয়ে জানা যায়
গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে
যখন প্রতিক ছিলো না তখন যেভাবে নিজেকে বিএনপি পরিচয় দিয়ে নির্বাচন করেছিলেন , পরে আবার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দলের হয়ে কাজ করেছেন, ঠিক থেমনি গত নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতিকের বিরুদ্ধে অবস্হান নিয়ে নিজেকে বিএনপির লোক হিসেবে পরিচয় দিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন ।
ভোটের কিছুদিন পরই সুর পাল্টে দেন ,তারপর আবার জেলা পরিষদ নির্বাচন বিএনপি নির্বাচন বয়কট করলেও আওয়ামীলীগর প্রচারনায় ছিলেন আব্দুল বাসিত বাচ্ছু, আওয়ামীলীগের বর্ষিয়ান নেতা জেলা প্রশাসক জনাব আজিজুর রহমানের পিছনে পিছনে ঘুরতে থাকেন আওয়ামীলীগে যোগ দেওয়ার জন্য ।
জনাব আজিজুর রহমান পরামর্শ দেন চেয়ারম্যান বাচ্ছু কে আওয়ামীলীগে যোগ দিতে হলে স্হানীয় আওয়ামীলীগের সুপারিশ নিয়ে আসতে পারলে যোগ দিতে পারবেন। স্হানীয় আওয়ামীলীগের সুপারিশ আনতে ব্যার্থ হলে কিছুদিন বিষন্নতায় ভুগছিলেন ।
তারপর গত সংসদ নির্বাচনে নৌকার পক্ষে প্রচারনায় ছিলেন সরব । তখন লোক মুখে প্রচার হতে থাকে আব্দুল বাসিত বাচ্ছু বিকল্পধারা হাজীপুর ইউনিয়নের দায়ীত্বে আসতে পারেন, যদিও এখন পর্যন্ত কমিটি হয় নাই ।
এখন আবার কৌশল অবলম্বন করতে থাকেন কি করে বিএনপিতে যোগ দেওয়া যায় ।সেক্ষেত্রে রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে সামনে রেখেই পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন তিনি ।
হাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান সভাপতি ফারুখ আহমেদ পান্নার সাথে ছিলো উনার সুসম্পর্ক ও সখ্যতা, তাই ভরসাও ছিলো বেশী ।
কিন্তু ফারুখ আহমেদ পান্না নীতিতে অটল, দলে কোনো দালালের জায়গা নেই এমন মনোভাব নিয়ে অটল থাকায় হিসেব পাল্টে যায় ।
লোকমুখ থেকে পাওয়া খবরাখবরে বেরিয়ে এলো কেনো এই অনিয়ম পথে এগুচ্ছেন চেয়ারম্যান বাচ্ছু ।
কাজের সময় এসে চেয়ারম্যান বাদ সাধলেন কেনো ?
এসবের কারন হিসেবে সবার মুখ থেকে বেরিয়ে এলো অনেক অজানা কথা, আব্দুল বাসিত বাচ্ছু চেয়েছিলেন এই কাজের সুবাদে হাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফারুক আহমেদ পান্না’র সহযোগিতায় আবারো বিএনপিতে যোগ দিবেন, সেই লক্ষে তিনি উপজেলা বিএনপির নেতৃবন্দের সাথে যোগাযোগ করে আসছিলেন এবং তাদের কয়েকজন নমনীয় মনোভাব দেখালেও বলেছেন স্হানীয়দের সাথে যোগাযোগ করতে ।
এর আগেও জেলা বিএনপির সভাপতি এম নাসের রহমান এর বাংলায় গিয়েছিলেন হাজীপুরের কয়েকজন যুবদলের নেতা- কর্মিদের নিয়ে, সেখানেও কোনো আশ্রয় পান নি ।
কিন্তু হাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বার বার দল বদলকারী কে দলে ফিরিয়ে আনতে রাজি নয়, তিনি তার নীতিতে অটল ।
তখনই চেয়ারম্যান আশাহত ও ক্ষুদ্ধ হন,
আর প্রতিশোধপরায়ন হয়ে পায়তারা করতে থাকেন হাজীপুর বিএনপির সভাপতি ফারুক আহমেদ পান্নার বিরুদ্ধে ।
কোনো কিছু না পেয়ে অবশেষে অভিমানী ও ক্ষুদ্ধ চেয়ারম্যান বাচ্ছু নিজের দেওয়া দরখাস্তে পাওয়া কাজের বিরুদ্ধেই অবস্হান নেন ।
আগামী ইউপি নির্বাচনের ইস্যু’ রাজনৈতিকভাবে কেবল ‘এগজিসটেন্স’ ধরে রাখাই এখন আব্দুল বাসিত বাচ্ছুর মূল কৌশল ।
গত ইউপি নির্বাচনেও তিনি বিএনপির নেতা বলে পরিচয় দিয়ে ভোট চেয়েছিলেন, এবং দলের সাথে বেঈমানী করবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আর এমন হবে না , কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে উল্টো ।এই ভোটেও তার ব্যত্যয় ঘটবে না।
উল্লেখ্য হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বাসিত বাচ্ছু নিজেকে বিএনপি পরিচয় দিলেও,তিনি কখনই ছাত্রদল ও যুবদল করেন নি ।
১৯৯৮ সনের দিতে তৎকালিন প্রভাবশালী বিএনপি নেতা ও সাংসদ এম এম শাহীন এর পত্রিকা মানব ঠিকানায় পারিশ্রমিক হিসেবে কাজে যোগ দেন, তারপর উনার সাথে থেকে থেকে নিজে নিজেকে বিএনপির একজন হিসেবে পরিচয় দিতে থাকেন ।
এলাকা এমন অবস্হা নিয়ে মাহতাবপুর গ্রামের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি এতো যুগ আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, আমরা ভিন্ন মতে হলেও, আমাদের মধ্যে শৃংখলা ছিল,চেয়ারম্যান একটি সড়কের ইসুৎ এনে আমাদের মাঝে বিভাজন ও বিরোধ সৃষ্টি করেছেন ।
এ নিয়ে ফারুখ আহমেদ পান্না কে মুটো ফোনে কল দিতে জিজ্ঞেস করলে “দেশদিগন্ত “ কে বলেন
কিছুদিন পূর্বে জেলা পরিষদ থেকে আমার বাড়ীর সম্মূখে রবিদাস বাড়ী হইতে মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল সাহেবের বাড়ী পর্যন্ত ইট সলিং রাস্তা নির্মানের সিডিউল ঘোষনা হয় যাহা আমার জানা মতে হাজীপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চু এর আবেদন ক্রমে এবং চেয়ারম্যান নিজেও আমাকে এবং আমার প্রতিবেশী মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজদ উল্লাহ সাহেবের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল সাহেব এবং উনার অন্যান্য ছেলে দের কে বলেন। তিনি বলেন রাস্তাটির টেন্ডার হয়ে গিয়েছে,অচিরেই কাজ শুরু হবে। কিন্তু ঠিকাদার আসার পর এই রাস্তাটি বাদ দিয়ে পশ্চিম দিকে অপর একটি ইট সলিং করা রাস্তা, যেটি রবিদাস বাড়ী হইতে মোমিন আলীর বাড়ী পর্যন্ত, চেয়ারম্যান সেটি দেখান।
কিন্তু ঠিকাদার রা এই রাস্তাটি সিডিউল মোতাবেক নয় বলে জানায়।পরবর্তীতে গত শনিবার ১১ জুলাই জেলা পরিষদের প্রধান প্রকৌশলী পর্যবেক্ষনে আসলে তিনি মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল সাহেবের বাড়ীর রাস্তা ও সরকারি পোস্ট অফিস পর্যন্ত দেখেন।দেখে বেড়ীবাধে উঠার পর চেয়ারম্যান এর দেখানো সেই পূর্বেরই ইট সলিং করা রাস্তা পরিদর্শন করেন। এ রাস্তাটি সিডিউল মোতাবেক নয় বলে চেয়ারম্যানকে প্রকৌশলী জানান।
ঐ সময়েই চেয়ারম্যান প্রকৌশলীকে সিডিউল ব্যতিরেকে উনার দেখানো রাস্তা নির্মানের জন্যে চাপ প্রয়োগ করেন।এক পর্যায়ে প্রকৌশলীকে অসম্মান মূলক কথা বার্তা বলেন। আমি এবং মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল সাহেব ও অন্যান্যরা এর তীব্র প্রতিবাদ করি এবং সিডিউল মোতাবেক কাজ করার জন্যে আমরা সবাই প্রকৌশলীকে আহব্বান জানাই।কিন্তু অত্যন্ত দূঃখের বিষয় এই বিষয়টাকে সম্পূর্ন অসত্য ভাবে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে লিখিয়ে চেয়ারম্যান নিজে উনার ফেইসবুক আইডি থেকে শেয়ার করেন।অথচ সিডিউলেই উল্লেখ আছে রাস্তাটি রবিদাস বাড়ী হইতে মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল সাহেবের বাড়ী পর্যন্ত। কিন্তু আমাকে অযথা অসত উদ্দেশ্যে জড়িয়ে চেয়ারম্যান জেলা পরিষদ এবং বিভিন্ন জায়গায় বলে যাচ্ছেন যে এইটা বিএনপি নেতার বাড়ীর রাস্তা,এবং আর ও অযৌক্তিক কথা বার্তা বলে বেড়াচ্ছেন যাহা একজন চেয়ারম্যান হিসেবে খুবই নিন্দনীয়। যাহার কথা এবং কাজে কোনো মিল নেই এবং ফেইসবুকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ইউনিয়নের জরুরি কাজকর্ম ফেলে কোনো চিন্তা ভাবনা না করে যখন যাহা মনে আসে তাহা নিয়ে অযথা আমার এলাকা এবং হাজীপুরবাসীর মধ্যে সম্প্রীতি নষ্ট করা,এসব কোনো চেয়ারম্যান এর নিকট কাম্য নহে।
আমি এর তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন বিভিন্ন অনলাইন ও গণমাধ্যমে ভূল তৎথ দিয়ে আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে, তা সত্য নয়। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য উদ্দেশ্য প্রনোদিত হয়ে তা করানো হয়েছে, আমি তার তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি ।
এ নিয়ে হাজীপুরের চেয়ারম্যান আব্দুল বাসিত বাচ্ছুকে মুটোফোনে কয়েকবার কল দিলে তা রিসিভ করেন নি ।
deshdiganto.com © 2019 কপিরাইট এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত
design and development by : http://webnewsdesign.com