ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনে হত্যার প্রতিবাদে পর্তুগালে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশী প্রবাসীরা প্রিয়জনদের মানসিক রোগ যদি আপনজন বুঝতে না পারেন আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা ও অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা করেছে পর্তুগাল আওয়ামীলীগ যেকোনো প্রচেষ্টা এককভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়: দুদক সচিব শ্রীমঙ্গলে দুটি চোরাই মোটরসাইকেল সহ মিল্টন কুমার আটক পর্তুগালের অভিবাসন আইনে ব্যাপক পরিবর্তন পর্তুগাল বিএনপি আহবায়ক কমিটির জুমে জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয় এমপি আনোয়ারুল আজিমকে হত্যার ঘটনায় আটক তিনজন , এতে বাংলাদেশী মানুষ জড়িত:স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকাস্থ ইরান দুতাবাসে রাইসির শোক বইয়ে মির্জা ফখরুলের স্বাক্ষর

করোনাযোদ্ধা সাধনা মিত্রের মৃত্য হলো সড়ক দুর্ঘটনায়

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : ০২:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুলাই ২০২০
  • / ৩২৫ টাইম ভিউ

সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করতেন সাধনা মিত্র (৫০)। নমুনা সংগ্রহের একপর্যায়ে নিজেই করোনায় সংক্রমিত হলেন। সুস্থ হয়ে তিনি আবার ফিরে এলেন নমুনা সংগ্রহের কাজে।

দৃঢ় মনোবল এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনাকে জয় করলেও সড়ক দুর্ঘটনার কাছে হেরে গেছেন তিনি। প্রায় নয় ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে হার মেনেছেন। গতকাল সোমবার রাত পৌনে ১২টার দিকে খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

সাধনা মিত্র যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি স্বামী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন।

মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, গতকাল বিকেলে সাধনা মিত্র একটি জরুরি কাজে স্বাস্থ্য সহকারী জাহিদুল ইসলামের মোটরসাইকেলে করে যশোর-চুকনগর আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে কেশবপুর যাচ্ছিলেন। বেলা সোয়া তিনটার দিকে উপজেলার ছাতিয়ানতলা এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেলের চাকার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে তিনি মহাসড়কের ওপর পড়ে যান। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাঁকে খুলনার বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত পৌনে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তিনি মারা যান।

ভ্রা রানী দেবনাথ আরও বলেন, সাধনা খুব ভালো স্বাস্থ্যকর্মী ছিলেন। তিনি একের পর এক উপজেলার সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। একসময় নিজেই কোভিড-১৯ আক্রান্ত হন। যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনা জয় করেছেন। পরে তিনি আবার নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু করেন। তাঁর মৃত্যুতে অনেক ক্ষতি হয়ে গেল।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, মনিরামপুরে নমুনা সংগ্রহ শুরু হয় গত ২ এপ্রিল থেকে। প্রথম দিন থেকেই নমুনা সংগ্রহ করেন সাধনা মিত্র। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ১০০ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। নমুনা সংগ্রহের একপর্যায়ে তাঁর শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও গলাব্যথা হয়। ২৭ এপ্রিল তিনি নিজের নমুনা সংগ্রহ করলেন, সঙ্গে আরও ছয় স্বাস্থ্যকর্মীর। ২৯ এপ্রিল নমুনা পরীক্ষার ফলাফল এল। তাতে তিনিসহ চারজনই করোনা পজিটিভ। এরপর তিনি বাসায় আইসোলেশনে চলে যান। আইসোলেশনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন। এরপর দুবার তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। দুবারই ফল আসে নেগেটিভ। গত ১৪ মে তিনি সুস্থতার ছাড়পত্র পান। এরপর নিয়ম মেনে বাসায় কোয়ারেন্টিনে (সঙ্গনিরোধ) থেকে আবার কাজে নেমে পড়েন তিনি।

গত ১ জুন প্রথম আলোয় ‘করোনা জয়ী সাধনা আবার নমুনা সংগ্রহের কাজে’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘যত দিন করোনাভাইরাস থাকবে, তত দিন আমি এই সেবা দিয়ে যাব।

সুত্র – প্রথম আলো

পোস্ট শেয়ার করুন

করোনাযোদ্ধা সাধনা মিত্রের মৃত্য হলো সড়ক দুর্ঘটনায়

আপডেটের সময় : ০২:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুলাই ২০২০

সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করতেন সাধনা মিত্র (৫০)। নমুনা সংগ্রহের একপর্যায়ে নিজেই করোনায় সংক্রমিত হলেন। সুস্থ হয়ে তিনি আবার ফিরে এলেন নমুনা সংগ্রহের কাজে।

দৃঢ় মনোবল এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনাকে জয় করলেও সড়ক দুর্ঘটনার কাছে হেরে গেছেন তিনি। প্রায় নয় ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে হার মেনেছেন। গতকাল সোমবার রাত পৌনে ১২টার দিকে খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

সাধনা মিত্র যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি স্বামী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন।

মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, গতকাল বিকেলে সাধনা মিত্র একটি জরুরি কাজে স্বাস্থ্য সহকারী জাহিদুল ইসলামের মোটরসাইকেলে করে যশোর-চুকনগর আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে কেশবপুর যাচ্ছিলেন। বেলা সোয়া তিনটার দিকে উপজেলার ছাতিয়ানতলা এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেলের চাকার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে তিনি মহাসড়কের ওপর পড়ে যান। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাঁকে খুলনার বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত পৌনে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তিনি মারা যান।

ভ্রা রানী দেবনাথ আরও বলেন, সাধনা খুব ভালো স্বাস্থ্যকর্মী ছিলেন। তিনি একের পর এক উপজেলার সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। একসময় নিজেই কোভিড-১৯ আক্রান্ত হন। যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনা জয় করেছেন। পরে তিনি আবার নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু করেন। তাঁর মৃত্যুতে অনেক ক্ষতি হয়ে গেল।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, মনিরামপুরে নমুনা সংগ্রহ শুরু হয় গত ২ এপ্রিল থেকে। প্রথম দিন থেকেই নমুনা সংগ্রহ করেন সাধনা মিত্র। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ১০০ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। নমুনা সংগ্রহের একপর্যায়ে তাঁর শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও গলাব্যথা হয়। ২৭ এপ্রিল তিনি নিজের নমুনা সংগ্রহ করলেন, সঙ্গে আরও ছয় স্বাস্থ্যকর্মীর। ২৯ এপ্রিল নমুনা পরীক্ষার ফলাফল এল। তাতে তিনিসহ চারজনই করোনা পজিটিভ। এরপর তিনি বাসায় আইসোলেশনে চলে যান। আইসোলেশনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন। এরপর দুবার তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। দুবারই ফল আসে নেগেটিভ। গত ১৪ মে তিনি সুস্থতার ছাড়পত্র পান। এরপর নিয়ম মেনে বাসায় কোয়ারেন্টিনে (সঙ্গনিরোধ) থেকে আবার কাজে নেমে পড়েন তিনি।

গত ১ জুন প্রথম আলোয় ‘করোনা জয়ী সাধনা আবার নমুনা সংগ্রহের কাজে’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘যত দিন করোনাভাইরাস থাকবে, তত দিন আমি এই সেবা দিয়ে যাব।

সুত্র – প্রথম আলো