মৌলভীবাজার কমলগঞ্জে জলপ্রপাতের সন্ধান, এখনই ঘুরে আসুন
- আপডেটের সময় : ০৯:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০১৯
- / ১১২৭ টাইম ভিউ
ছয়ফুল আলম সাইফুলঃ মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের সীমান্ত এলাকার গহীন বনে হামহামের পর সন্ধান পাওয়া গেছে নতুন একটি জলপ্রপাতের। সংরক্ষিত বনের ভেতরে বড় ফিকল নামক এলাকায় দেখা মিলেছে এ ঝরনার। ঝরনাটির নাম ‘ফিকল ঝরনা’। সমতল থেকে প্রায় ১০০ ফুট উপরে পাহাড়ের চূড়ায় বিশাল এলাকাজুড়ে অবস্থিত এ জলাশয়।
জানা যায়, এতদিন লোকচক্ষুর আড়ালে ছিল ঝরনাটি। তবে শুধু দৃষ্টিনন্দন ঝরনা নয়, পথের দু’পাশের বুনো গাছের সাজসজ্জা দৃষ্টি কেড়ে নেবে অনায়াসে। গহীন বনের উঁচু উঁচু পাহাড় আর সবুজ অরণ্যের মনোরম দৃশ্য দেখে মন জুড়িয়ে যাবে।
ফিকল জলধারায় যাওয়ার ঝিরি পথে দেখতে পাবেন বিশাল আকৃতির অসংখ্য পাথর। প্রতিটি পাথরের আকৃতি রহস্যময়। পাথর মূলত গোলাকার কিংবা ডিম আকারের হলেও এ জলধারার পাথরে ভিন্নতার ছাপ রয়েছে। পাথরের দিকে চোঁখ রাখলে ভিন্ন এক দৃশ্য ভেসে উঠবে। মনে হবে বন্য কোন প্রাণী পাহাড়ি ছড়ার বুকে ঘুমিয়ে আছে।
আঁকাবাঁকা পাহাড়ি ছড়া দিয়ে হেঁটে চলার পথে সামনে যত দূর চোখ যাবে, শুধুই দেখবেন দুর্ভেদ্য সবুজ জঙ্গল আর রহস্যাবৃত অসংখ্য পাথর। পাহাড়ের চূড়া থেকে নামা পানি পুরো পথকেই বিপজ্জনকভাবে পিচ্ছিল করে রেখেছে। দুর্গম আর চরম ঝুঁকির পথ শেষে এ যেন অন্য এক রোমাঞ্চকর পৃথিবী। যারা ট্রেকিং ভালোবাসেন, তাদের স্বাগত জানাবে নতুন এ ঝরনা।
পর্যটন জেলা মৌলভীবাজারের সবচেয়ে সমৃদ্ধ উপজেলা কমলগঞ্জ। এ উপজেলায় রয়েছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, রাজান্দি রিজার্ভ ফরেস্ট, হামহাম জলপ্রপাত, মাধবপুর লেক, ধলাই সীমান্তে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানের স্মৃতিস্তম্ভ উল্লেখযোগ্য। নতুন করে সন্ধান পাওয়া ‘ফিকল ঝরনা’ যুক্ত হয়ে এলাকার পর্যটনকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।
কমলগঞ্জের সীমান্ত এলাকায় সংবাদ সংক্রান্ত কাজে গিয়ে ঝরনাটি আবিষ্কার করেন সাংবাদিক সাজিদুর রহমান সাজু। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘জলধারাটি যতটা না অবিশ্বাস্য, যতটা না অলৌকিক, তার চাইতেও বেশি এর সৌন্দর্য। আপন খেয়ালে এখানে পাহাড়ের উপর জলরাশি সঞ্চার করে তৈরি করেছে হ্রদ। সমতল থেকে প্রায় ১০০ ফুট উপরে পাহাড়ের চূড়ায় বিশাল এলাকাজুড়ে অবস্থিত এ জলাশয়।’
দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে চলে আসুন কমলগঞ্জ উপজেলা সদরে। সেখান থেকে বাস অথবা সিএনজি যোগে কুরমা চা বাগান। সেখান থেকে ভাড়ায় চালিত সিএনজি যোগে আঁকাবাঁকা কাদা মাটির উঁচুনিচু পাহাড়ি এলাকার কুরমা চা বাগানের ভেতর দিয়ে যেতে হবে কুরমা খাসিয়া পল্লী। খাসিয়া পল্লীর পাশেই ঝিরি পথের শুরু। সেখান থেকে পাহাড়ি ঝিরির পাশ দিয়ে বনের সরু পথে উঁচুনিচু পাহাড়ি টিলা অতিক্রম করে, কখনো পাহাড়ি ঝিরি পথ দিয়ে এক ঘণ্টায় পৌঁছা সম্ভব দৃষ্টিনন্দন এ জলধারায়।