ঢাকা , শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলতেবিভিন্ন চক্রান্তে লিপ্ত আ’লীগ গ্রিন সিলেট ট্রাভেলসের আয়োজনে বাংলাদেশে পর্তুগাল দূতাবাস/কনসুলেট চেয়ে খোলা চিঠি স্বৈরাচার সরকার পতনের পর যুক্তরাজ্যে ফিরছেন সিলেট আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপি পর্তুগাল শাখার উদ্যোগে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত! বন্যার্ত মানুষের ত্রান তহবিলের জন্যে ৬ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘোষণা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বেজা শাখার কর্মি সম্মেলন অনুষ্ঠিত বিমানের নতুন চেয়ারম্যান কুলাউড়ার আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও ২৪ কোটা আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা দোয়া মাহফিল পর্তুগালে রাজনগর প্রবাসী ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আত্মপ্রকাশ পর্তুগাল বিএনপি’র আয়োজনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্বরণে দোয়া ও মাহফিল সম্পন্ন বিমূর্ত সব মুর্হুতরা, আমার মা’য়ের সাথের শেষ শনিবার – শাহারুল কিবরিয়া

এক সপ্তাহের পাহাড়ি ঢলে ডুবে গেল সিলেট এবং নগরেও পানি

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : ১১:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ মে ২০২২
  • / ২৮০ টাইম ভিউ

এক সপ্তাহের পাহাড়ি ঢল। হঠাৎ বন্যা। ডুবে গেল সিলেট। নগরেও পানি। এখনো গ্রাম ভাসছে অথৈ জলে। অথচ এই সময়ে এই ঢলের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না কেউ। সাধারণত বন্যা হয় জুনের শেষ দিকে কিংবা জুলাইয়ে। এপ্রিলে আসে পাহাড়ি ঢল। এসেছেও। হঠাৎ ঢলে সুনামগঞ্জের হাওর এলাকার ফসল নিয়ে গেছে কিন্তু সিলেটে এবারের ঢল এলো আগাম। এখন পানি নামছে। ভেসে উঠছে ক্ষত চিহ্ন। তছনছ করে দিয়েছে সিলেটকে। বিশেষ করে নগর এবং গ্রামের সড়ক বিপর্যস্ত। নগরীর একটি রাস্তাও ভালো নেই। গ্রামীণ জনপদের রাস্তার অবস্থা আরও ভয়াবহ।

সুরমা ও কুশিয়ারা বাঁধ অনেক এলাকায় সড়ক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এই বাঁধগুলো ভেঙে গেছে; উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের অনেক সড়ক ভেঙে চুরমার। ফলে বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে দুর্ভোগের শেষ নেই। নদী ভাঙনেরও আশঙ্কা রয়েছে। পানি নামলে ভাঙন ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা পাউবো কর্মকর্তাদের। সিলেট নগরে পানি ঢুকে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগে বিপর্যয় নেমে এসেছিল। বিদ্যুতের সাব-স্টেশন ডুবে গিয়েছিল। গ্যাসের লাইনে পানি ঢুকে। পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু করা হয়েছে।

বিশেষ করে উপশহর, ঘাষিটুলা, ছড়ারপাড়, মাছিমপুর, কুশিঘাট, টুকেরবাজার এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এসব ক্ষতি সারতেই কয়েক কোটি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। ১৩টি উপজেলায়ই বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

সড়ক সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর তথ্য মতে; সিলেটে ঢলে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া মৎস্য, কৃষিসহ নানা দিকেও ক্ষতি হয়েছে। প্রায় দেড় হাজার বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিপ্রস্ত সড়কের মধ্যে সড়ক ও জনপথের অধীনস্থ প্রায় ৭২ কিলোমিটার, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ২৬৭ কিলোমিটার এবং সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৪০ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। বন্যায় সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৫টি ওয়ার্ডের প্রায় ১৪০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতির মুখে পড়েছে। এগুলো সংস্কারে প্রয়োজন ১০০ কোটি টাকা।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান জানিয়েছেন- ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫টির ১২৫ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর বাইরে সম্প্রসারিত নতুন ওয়ার্ডগুলোর প্রায় ১৫ কিলোমিটার সড়কেও বন্যার ক্ষত আছে। এই ক্ষতি সারাতে ১০০ কোটি টাকা লাগতে পারে। এবারের বন্যায় সিলেটে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার সড়ক তলিয়ে যায়। তবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৪৮০ কিলোমিটার সড়ক। এর বাইরে সদর উপজেলা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় দুটি কালভার্ট ভেঙে গেছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের সারি-গোয়াইনঘাট সড়কের ১২ দশমিক ৪০ কিলোমিটার, সিলেট-তামাবিল-জাফলং সড়কের ১ দশমিক ২০ কিলোমিটার, কানাইঘাটের দরবস্ত-কানাইঘাট-শাহবাগ সড়কের ১৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার এবং সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের ৬ দশমিক ৫০ কিলোমিটার সড়ক বন্যায় তলিয়ে যায়।

এ ছাড়া বিশ্বনাথ-লামাকাজি সড়ক, কোম্পানীগঞ্জ-ছাতক সড়ক, শেওলা-সুতারকান্দি সড়ক এবং বিমানবন্দর-বাদাঘাট-কুমারগাঁও সড়কের বিভিন্ন অংশ ছিল পানির নিচে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমানের তথ্য মতে- বন্যায় সওজের অধীনস্থ ১০টি সড়কের প্রায় ৭২ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংস্কারে ৮০ কোটি টাকার মতো লাগতে পারে বলে ধারণা করেন তিনি।

সিলেটের এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী এনামুল কবির জানিয়েছেন- এখন পর্যন্ত ১১১টি সড়কের প্রায় ২৬৭ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া এলজিইডি’র দুটি কালভার্ট ভেঙেছে। এসব সংস্কারে আনুমানিক ২০০ কোটি টাকা লাগতে পারে। আকস্মিক বন্যায় সিলেটের ১১টি উপজেলায় মোট ১৮ হাজার ৭৪৯টি পুকুর, দীঘি, হ্যাচারি ও মাছের খামার তলিয়ে গেছে। এতে ২ কোটি ১৩ লাখ মাছের পোনা এবং ২ হাজার ৩০৫ টন মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এতে মাছচাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর। মাছ ভেসে যাওয়া ছাড়াও হয়েছে অবকাঠামোগত ক্ষতি। ফলে সিলেট জেলার ১৫ হাজার ১৬৩ জন খামার মালিকের ২১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ।

বন্যায় জকিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, বিশ্বনাথ, জৈন্তাপুর ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় ক্ষতি সবচেয়ে বেশি। বন্যায় আক্রান্ত হওয়ায় প্রায় ১২শ’ বাড়িঘর ভেঙে গেছে। বিশেষ করে হাওরাঞ্চলে ক্ষতি হয়েছে বেশি। এ ছাড়া সিলেট নগরে বাঁধ না থাকা এবং সুরমা খনন না হওয়ার কারণে তলিয়ে যাওয়া সিলেট নগরে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয় অর্ধশত কোটি টাকার।

সিলেট চেম্বার অব কমার্সের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ জানিয়েছেন- কাজিরবাজারের অর্ধশতাধিক চাল মিল কল, কালিঘাটের চাল বাজার, পিয়াজপট্টি, কাজিরবাজার এলাকা ছিল পানি নিচে। কোটি কোটি টাকার মালামাল পানিতে তলিয়ে গেছে।

এদিকে- সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন- ‘এবারের পাহাড়ি ঢল আমাদের বড় শিক্ষা দিয়ে গেল। সিলেট নগরকে বন্যার পানি থেকে বাঁচাতে হলে আমাদের নদী খনন ও বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। ইতিমধ্যে আমরা এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা ঢাকায় মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছি। আমরা মনে করি; আগামী বর্ষার মৌসুমের আগে এই কাজগুলো আমাদের করতে হবে।’

পোস্ট শেয়ার করুন

এক সপ্তাহের পাহাড়ি ঢলে ডুবে গেল সিলেট এবং নগরেও পানি

আপডেটের সময় : ১১:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ মে ২০২২

এক সপ্তাহের পাহাড়ি ঢল। হঠাৎ বন্যা। ডুবে গেল সিলেট। নগরেও পানি। এখনো গ্রাম ভাসছে অথৈ জলে। অথচ এই সময়ে এই ঢলের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না কেউ। সাধারণত বন্যা হয় জুনের শেষ দিকে কিংবা জুলাইয়ে। এপ্রিলে আসে পাহাড়ি ঢল। এসেছেও। হঠাৎ ঢলে সুনামগঞ্জের হাওর এলাকার ফসল নিয়ে গেছে কিন্তু সিলেটে এবারের ঢল এলো আগাম। এখন পানি নামছে। ভেসে উঠছে ক্ষত চিহ্ন। তছনছ করে দিয়েছে সিলেটকে। বিশেষ করে নগর এবং গ্রামের সড়ক বিপর্যস্ত। নগরীর একটি রাস্তাও ভালো নেই। গ্রামীণ জনপদের রাস্তার অবস্থা আরও ভয়াবহ।

সুরমা ও কুশিয়ারা বাঁধ অনেক এলাকায় সড়ক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এই বাঁধগুলো ভেঙে গেছে; উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের অনেক সড়ক ভেঙে চুরমার। ফলে বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে দুর্ভোগের শেষ নেই। নদী ভাঙনেরও আশঙ্কা রয়েছে। পানি নামলে ভাঙন ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা পাউবো কর্মকর্তাদের। সিলেট নগরে পানি ঢুকে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগে বিপর্যয় নেমে এসেছিল। বিদ্যুতের সাব-স্টেশন ডুবে গিয়েছিল। গ্যাসের লাইনে পানি ঢুকে। পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু করা হয়েছে।

বিশেষ করে উপশহর, ঘাষিটুলা, ছড়ারপাড়, মাছিমপুর, কুশিঘাট, টুকেরবাজার এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এসব ক্ষতি সারতেই কয়েক কোটি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। ১৩টি উপজেলায়ই বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

সড়ক সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর তথ্য মতে; সিলেটে ঢলে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া মৎস্য, কৃষিসহ নানা দিকেও ক্ষতি হয়েছে। প্রায় দেড় হাজার বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিপ্রস্ত সড়কের মধ্যে সড়ক ও জনপথের অধীনস্থ প্রায় ৭২ কিলোমিটার, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ২৬৭ কিলোমিটার এবং সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৪০ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। বন্যায় সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৫টি ওয়ার্ডের প্রায় ১৪০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতির মুখে পড়েছে। এগুলো সংস্কারে প্রয়োজন ১০০ কোটি টাকা।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান জানিয়েছেন- ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫টির ১২৫ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর বাইরে সম্প্রসারিত নতুন ওয়ার্ডগুলোর প্রায় ১৫ কিলোমিটার সড়কেও বন্যার ক্ষত আছে। এই ক্ষতি সারাতে ১০০ কোটি টাকা লাগতে পারে। এবারের বন্যায় সিলেটে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার সড়ক তলিয়ে যায়। তবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৪৮০ কিলোমিটার সড়ক। এর বাইরে সদর উপজেলা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় দুটি কালভার্ট ভেঙে গেছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের সারি-গোয়াইনঘাট সড়কের ১২ দশমিক ৪০ কিলোমিটার, সিলেট-তামাবিল-জাফলং সড়কের ১ দশমিক ২০ কিলোমিটার, কানাইঘাটের দরবস্ত-কানাইঘাট-শাহবাগ সড়কের ১৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার এবং সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের ৬ দশমিক ৫০ কিলোমিটার সড়ক বন্যায় তলিয়ে যায়।

এ ছাড়া বিশ্বনাথ-লামাকাজি সড়ক, কোম্পানীগঞ্জ-ছাতক সড়ক, শেওলা-সুতারকান্দি সড়ক এবং বিমানবন্দর-বাদাঘাট-কুমারগাঁও সড়কের বিভিন্ন অংশ ছিল পানির নিচে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমানের তথ্য মতে- বন্যায় সওজের অধীনস্থ ১০টি সড়কের প্রায় ৭২ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংস্কারে ৮০ কোটি টাকার মতো লাগতে পারে বলে ধারণা করেন তিনি।

সিলেটের এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী এনামুল কবির জানিয়েছেন- এখন পর্যন্ত ১১১টি সড়কের প্রায় ২৬৭ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া এলজিইডি’র দুটি কালভার্ট ভেঙেছে। এসব সংস্কারে আনুমানিক ২০০ কোটি টাকা লাগতে পারে। আকস্মিক বন্যায় সিলেটের ১১টি উপজেলায় মোট ১৮ হাজার ৭৪৯টি পুকুর, দীঘি, হ্যাচারি ও মাছের খামার তলিয়ে গেছে। এতে ২ কোটি ১৩ লাখ মাছের পোনা এবং ২ হাজার ৩০৫ টন মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এতে মাছচাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর। মাছ ভেসে যাওয়া ছাড়াও হয়েছে অবকাঠামোগত ক্ষতি। ফলে সিলেট জেলার ১৫ হাজার ১৬৩ জন খামার মালিকের ২১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ।

বন্যায় জকিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, বিশ্বনাথ, জৈন্তাপুর ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় ক্ষতি সবচেয়ে বেশি। বন্যায় আক্রান্ত হওয়ায় প্রায় ১২শ’ বাড়িঘর ভেঙে গেছে। বিশেষ করে হাওরাঞ্চলে ক্ষতি হয়েছে বেশি। এ ছাড়া সিলেট নগরে বাঁধ না থাকা এবং সুরমা খনন না হওয়ার কারণে তলিয়ে যাওয়া সিলেট নগরে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয় অর্ধশত কোটি টাকার।

সিলেট চেম্বার অব কমার্সের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ জানিয়েছেন- কাজিরবাজারের অর্ধশতাধিক চাল মিল কল, কালিঘাটের চাল বাজার, পিয়াজপট্টি, কাজিরবাজার এলাকা ছিল পানি নিচে। কোটি কোটি টাকার মালামাল পানিতে তলিয়ে গেছে।

এদিকে- সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন- ‘এবারের পাহাড়ি ঢল আমাদের বড় শিক্ষা দিয়ে গেল। সিলেট নগরকে বন্যার পানি থেকে বাঁচাতে হলে আমাদের নদী খনন ও বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। ইতিমধ্যে আমরা এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা ঢাকায় মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছি। আমরা মনে করি; আগামী বর্ষার মৌসুমের আগে এই কাজগুলো আমাদের করতে হবে।’