ঢাকা , রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলতেবিভিন্ন চক্রান্তে লিপ্ত আ’লীগ গ্রিন সিলেট ট্রাভেলসের আয়োজনে বাংলাদেশে পর্তুগাল দূতাবাস/কনসুলেট চেয়ে খোলা চিঠি স্বৈরাচার সরকার পতনের পর যুক্তরাজ্যে ফিরছেন সিলেট আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপি পর্তুগাল শাখার উদ্যোগে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত! বন্যার্ত মানুষের ত্রান তহবিলের জন্যে ৬ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘোষণা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বেজা শাখার কর্মি সম্মেলন অনুষ্ঠিত বিমানের নতুন চেয়ারম্যান কুলাউড়ার আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও ২৪ কোটা আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা দোয়া মাহফিল পর্তুগালে রাজনগর প্রবাসী ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আত্মপ্রকাশ পর্তুগাল বিএনপি’র আয়োজনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্বরণে দোয়া ও মাহফিল সম্পন্ন বিমূর্ত সব মুর্হুতরা, আমার মা’য়ের সাথের শেষ শনিবার – শাহারুল কিবরিয়া

লোকে বলে বলে রে ঘর-বাড়ি ভালা নয় আমার, অবহেলায় হাসন রাজা ঘর-বাড়ি, আজ ১৬৫তম জন্মবার্ষিকী

ছয়ফুল আলম সাইফুলঃ
  • আপডেটের সময় : ০৫:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৯
  • / ১০৩৬ টাইম ভিউ

মাটিরও পিঞ্জিরার মাঝে বন্দি হইয়ারে কান্দে হাসন রাজার মন মইনারে, লোকে বলে বলে রে ঘর-বাড়ি ভালা নয় আমার কি ঘর বানাইব আমি শূন্যের মাঝার,’ অমর কালজয়ী এমনসব গানের স্রষ্টা মরমী কবি হাসন রাজা।

এই গানের মতই হাসন রাজার সুনামগঞ্জ শহরের নিকটবর্তী সুরমা নদীর তীর ঘেঁষে যাওয়া লক্ষণশ্রী পরগণার তেঘরিয়া গ্রামে বিখ্যাত মরমী সাধক হাসন রাজার বাড়ী এখন অযত্নে অবহেলায় মাঠির সাথে মিতালি করে নীরবেই কান্দে। ক্রমে ক্রমে ধ্বংসের পথে যাচ্ছে এই পুরানো বাড়ীটি। নেই জমিদার, নেই জমিদারিও। আছে শুধু জমিদারের রেখে যাওয়া স্থাপত্য। নেই জমিদারদের হাতি-ঘোড়া, নেই পাক-পেয়াদাও। স্মৃতি ধরে রাখতে উদ্যোগ নিচ্ছে না কেউ। এ বাড়ীটি কালের সাক্ষী হয়ে আজও পর্যটকদের দৃষ্টি কেড়ে নেয়। তবে এই মরমী সাধকের মৃত্যুর ৯৭ বছর পর সংস্কার আর সংরক্ষণের অভাবে সেগুলো এখন ধ্বংসের পথে।

এদিকে আজ শনিবার (২১ ডিস্বেম্বর) ১৬৫ তম জন্ম বার্ষিকী। এই মরমী সাধকের জন্ম-মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শহরে প্রশাসন অথবা পরিবারের পক্ষ থেকে নেই কোনো আয়োজন। অনেকটাই নিরবে কাটছে এই দিন।

সরজমিনে শুক্রবার গিয়ে দেখা যায়, যে বাড়ীতে হাসন রাজা বসবাস করতেন এটি পরিতেক্ত অবস্থায় রয়েছে। নেই কোনো মানুষের বসবাস। ঘর দোয়ার তালা বদ্ধ। এই গুণি সাধকের বাড়ীটি পড়ে আছে অযত্নে আর অবহেলায়। পৌরশহরে ভিতরে অবস্থিত হাসন রাজার বাড়িটি ‘সাহেব’ বাড়ি নামেই সকলের কাছে পরিচিত। বাড়িটি ঘিরে রয়েছে কয়েক’শ বছরের ইতিহাস। রয়েছে একটি হাসন রাজা মিউজিয়াম। জমিদার বাড়িটি এখন কালের সাক্ষী হয়ে আছে। যখন এই রাজা জীবিত ছিলেন তখন বাড়ীটি ঝাকঝমক ছিল। এখন সেখানে শুনশান নিরবতা।

স্থানীয়রা জানান, পরিবার ও প্রশাসন গাফিলতির কারণে অযত্নে আর অবহেলায় পড়ে রয়েছে হাসন রাজার বাড়ীটি। সংস্কার বা সংরক্ষণ করার নেই কোনো উদ্দ্যেগ। হলহলিয়া জমিদার বাড়ী, গৌরারং জমিদার বাড়ী, সুখাইড় জমিদার বাড়ীসহ জেলার বিভিন্ন জমিদার বাড়ী সংরক্ষণ করা হলেও এই গুণি সাধক রাজার কোনো স্থাপনা বা স্থাপত্য সংরক্ষণ করা হয়নি। এছাড়া প্রশাসনের আয়োজনে জেলার আরো লোককবি বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম, বৈষ্ণব কবি রাধারমণ দত্ত, মরমী গীতিকবি দুর্বিন শাহ’র জন্ম-মৃত্যুবাষির্কী সরকারি পৃষ্টপোষকতায় পালিত হয়ে থাকলেও অবহেলায় রয়েছেন এই মরমী সাধক হাসন রাজা।

পর্যটকরা মনে করেন, প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের হস্তক্ষেপে হয়তো জমিদার বাড়িটিও হতে পারে অন্যতম এক পর্যটন কেন্দ্র। এর রক্ষণাবেক্ষণের ফলে নতুন প্রজন্মকে জানতে পারবে তৎকালীন জমিদারদের ইতিহাস-ঐতিহ্য। যে বাড়ীর দিকে তাকিয়ে থাকেন হাসন রাজার অসংখ্য ভক্ত অনুরাগী। আগ্রহ নিয়ে হাসন রাজার বাড়ী দেখতে এসে অনেকেই হতাশ হন। যে হতাশা মানুষের মধ্যে কষ্টের পাহাড় জমে থাকে। বিষয়টি নিয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বাড়ীতে আসা পর্যটকরা।

সিলেট থেকে আসা পর্যটক মিনাল কান্তি দাস বলেন,‘অনেক দিন ধরে ইচ্ছে ছিলো হাসন রাজার বাড়ীটি দেখার। কিন্তু বাড়ীটি দেখে কষ্ট হয় এতো গুণি সাধক রাজার বাড়ীটি পরিতেক্ত অবস্থায় রয়েছে।

আরেক পর্যটক সাইফুল্লাহ হাসান বলেন,‘দেশে হাসন রাজার এতো সুনাম থাকলেও এই রাজার বাড়ীটি সংরক্ষণ করা হয়নি। যে ঘরে হাসন রাজা থাকতেন এই ঘরটিকে সংরক্ষণ করে মিউজিয়াম করলে পর্যটকদের আকর্শন বাড়ানো যেতো কিন্তু তা ও নেই। যে মিউজিয়ামটি আছে পর্যটকদের তুলনায় ছোট। আমাদের দাবি দ্রুত এই মরমী সাধনের স্মৃতি সংরক্ষণ করা হোক।

বাড়ীটি দেখতে আসা কিশোরগঞ্জের আব্দুস সালাম বলেন,‘সুরমা নদীর পাড়ে হাসন রাজার বাড়ী। বাড়িতে একটি মিউজিয়াম ছাড়া আর কিছু নেই। শুধু মাত্র স্থাপনাগুলো আছে। তবে এই জমিদার হাসন রাজারের স্থাপনাগুলো সরকারিভাবে সংগ্রহ করলে এখানে পর্যটন স্পট হতে পারে।

হাসন রাজার প্রপৌত্র ও হাসন রাজা পরিষদের চেয়ারম্যান সামারীন দেওয়ান বলেন,‘হাসন রাজা পরিবার তাকিয়ে থাকে প্রশাসনের দিকে আর প্রশাসন থাকিয়ে থাকে পরিবারের দিকে। এর জন্য স্থানীয় বা সরকারি পৃষ্টপোষকতায় পালিত হয় না হাসন রাজার জন্ম অথবা মৃত্যুবার্ষিকী। হাসন রাজার ১৬৫তম জন্মবার্ষিকী এবছর অনুষ্ঠান বিহীনভাবে চলছে। আমরা প্রতিবছর চেষ্ঠা করি হাসন রাজা পরিষদের উদ্দ্যেগে স্পনসর পাওয়া গেলে বড় আকারে সুনামগঞ্জের বালুর মাঠে অনুষ্ঠান করে থাকি। কিন্তু এবছর সেটা করা হচ্ছে না। আসলে হাসন রাজার বিষয়ে স্থানীয় বা সরকারি উদ্দ্যেগ একেবারেই নাই।

তিনি আরো বলেন,‘হাসন রাজার পরিবারের পক্ষ থেকে সুরমা নদীর তীঁর ঘেঁষে হাসন রাজার বাড়ীতে একটি দৃষ্টি নন্দন একটি মিউজিয়াম, একটি সংগ্রহ শালার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আমরা সরকারকে জানাবো আপনারা এগিয়ে আসুন আমরা হাসন রাজাকে বড় আকারে তুলে ধরি। সরকার এগিয়ে আসলে এই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িক হবে। অন্যথায়, এভাবে চলতে থাকলে হাসন রাজার মানুষের কাছ থেকে বিলুপ্তি হয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন,‘গত কিছুদিন আগে পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের পরিকল্পনা সচিব ও পর্যটন চেয়ারম্যান স্যার হাসন রাজার বাড়ী পরিদর্শন করে গেছেন। এসময় হাসন রাজার পরিবারকে বলা হয়েছে হাসন রাজাকে ধরে রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে একটি হাসন রাজা সংগ্রহশালা করা হবে। সংগ্রহশালায় হাসন রাজার জীবন কর্ম নিয়ে চর্চা করা যাবে। হাসন রাজার বাড়ী সংরক্ষণ করতে তাদেরকে বলা হয়েছে একটি প্রস্তাবনা পাঠানোর জন্য কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো প্রস্তাবনা আসে নি।

জন্ম-মৃত্যুবার্ষিকী পালন প্রসঙ্গে বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে শনিবার আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হবে। এর মধ্যে দিয়ে হাসন রাজাকে স্মরণ করা হবে।

পোস্ট শেয়ার করুন

লোকে বলে বলে রে ঘর-বাড়ি ভালা নয় আমার, অবহেলায় হাসন রাজা ঘর-বাড়ি, আজ ১৬৫তম জন্মবার্ষিকী

আপডেটের সময় : ০৫:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৯

মাটিরও পিঞ্জিরার মাঝে বন্দি হইয়ারে কান্দে হাসন রাজার মন মইনারে, লোকে বলে বলে রে ঘর-বাড়ি ভালা নয় আমার কি ঘর বানাইব আমি শূন্যের মাঝার,’ অমর কালজয়ী এমনসব গানের স্রষ্টা মরমী কবি হাসন রাজা।

এই গানের মতই হাসন রাজার সুনামগঞ্জ শহরের নিকটবর্তী সুরমা নদীর তীর ঘেঁষে যাওয়া লক্ষণশ্রী পরগণার তেঘরিয়া গ্রামে বিখ্যাত মরমী সাধক হাসন রাজার বাড়ী এখন অযত্নে অবহেলায় মাঠির সাথে মিতালি করে নীরবেই কান্দে। ক্রমে ক্রমে ধ্বংসের পথে যাচ্ছে এই পুরানো বাড়ীটি। নেই জমিদার, নেই জমিদারিও। আছে শুধু জমিদারের রেখে যাওয়া স্থাপত্য। নেই জমিদারদের হাতি-ঘোড়া, নেই পাক-পেয়াদাও। স্মৃতি ধরে রাখতে উদ্যোগ নিচ্ছে না কেউ। এ বাড়ীটি কালের সাক্ষী হয়ে আজও পর্যটকদের দৃষ্টি কেড়ে নেয়। তবে এই মরমী সাধকের মৃত্যুর ৯৭ বছর পর সংস্কার আর সংরক্ষণের অভাবে সেগুলো এখন ধ্বংসের পথে।

এদিকে আজ শনিবার (২১ ডিস্বেম্বর) ১৬৫ তম জন্ম বার্ষিকী। এই মরমী সাধকের জন্ম-মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শহরে প্রশাসন অথবা পরিবারের পক্ষ থেকে নেই কোনো আয়োজন। অনেকটাই নিরবে কাটছে এই দিন।

সরজমিনে শুক্রবার গিয়ে দেখা যায়, যে বাড়ীতে হাসন রাজা বসবাস করতেন এটি পরিতেক্ত অবস্থায় রয়েছে। নেই কোনো মানুষের বসবাস। ঘর দোয়ার তালা বদ্ধ। এই গুণি সাধকের বাড়ীটি পড়ে আছে অযত্নে আর অবহেলায়। পৌরশহরে ভিতরে অবস্থিত হাসন রাজার বাড়িটি ‘সাহেব’ বাড়ি নামেই সকলের কাছে পরিচিত। বাড়িটি ঘিরে রয়েছে কয়েক’শ বছরের ইতিহাস। রয়েছে একটি হাসন রাজা মিউজিয়াম। জমিদার বাড়িটি এখন কালের সাক্ষী হয়ে আছে। যখন এই রাজা জীবিত ছিলেন তখন বাড়ীটি ঝাকঝমক ছিল। এখন সেখানে শুনশান নিরবতা।

স্থানীয়রা জানান, পরিবার ও প্রশাসন গাফিলতির কারণে অযত্নে আর অবহেলায় পড়ে রয়েছে হাসন রাজার বাড়ীটি। সংস্কার বা সংরক্ষণ করার নেই কোনো উদ্দ্যেগ। হলহলিয়া জমিদার বাড়ী, গৌরারং জমিদার বাড়ী, সুখাইড় জমিদার বাড়ীসহ জেলার বিভিন্ন জমিদার বাড়ী সংরক্ষণ করা হলেও এই গুণি সাধক রাজার কোনো স্থাপনা বা স্থাপত্য সংরক্ষণ করা হয়নি। এছাড়া প্রশাসনের আয়োজনে জেলার আরো লোককবি বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম, বৈষ্ণব কবি রাধারমণ দত্ত, মরমী গীতিকবি দুর্বিন শাহ’র জন্ম-মৃত্যুবাষির্কী সরকারি পৃষ্টপোষকতায় পালিত হয়ে থাকলেও অবহেলায় রয়েছেন এই মরমী সাধক হাসন রাজা।

পর্যটকরা মনে করেন, প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের হস্তক্ষেপে হয়তো জমিদার বাড়িটিও হতে পারে অন্যতম এক পর্যটন কেন্দ্র। এর রক্ষণাবেক্ষণের ফলে নতুন প্রজন্মকে জানতে পারবে তৎকালীন জমিদারদের ইতিহাস-ঐতিহ্য। যে বাড়ীর দিকে তাকিয়ে থাকেন হাসন রাজার অসংখ্য ভক্ত অনুরাগী। আগ্রহ নিয়ে হাসন রাজার বাড়ী দেখতে এসে অনেকেই হতাশ হন। যে হতাশা মানুষের মধ্যে কষ্টের পাহাড় জমে থাকে। বিষয়টি নিয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বাড়ীতে আসা পর্যটকরা।

সিলেট থেকে আসা পর্যটক মিনাল কান্তি দাস বলেন,‘অনেক দিন ধরে ইচ্ছে ছিলো হাসন রাজার বাড়ীটি দেখার। কিন্তু বাড়ীটি দেখে কষ্ট হয় এতো গুণি সাধক রাজার বাড়ীটি পরিতেক্ত অবস্থায় রয়েছে।

আরেক পর্যটক সাইফুল্লাহ হাসান বলেন,‘দেশে হাসন রাজার এতো সুনাম থাকলেও এই রাজার বাড়ীটি সংরক্ষণ করা হয়নি। যে ঘরে হাসন রাজা থাকতেন এই ঘরটিকে সংরক্ষণ করে মিউজিয়াম করলে পর্যটকদের আকর্শন বাড়ানো যেতো কিন্তু তা ও নেই। যে মিউজিয়ামটি আছে পর্যটকদের তুলনায় ছোট। আমাদের দাবি দ্রুত এই মরমী সাধনের স্মৃতি সংরক্ষণ করা হোক।

বাড়ীটি দেখতে আসা কিশোরগঞ্জের আব্দুস সালাম বলেন,‘সুরমা নদীর পাড়ে হাসন রাজার বাড়ী। বাড়িতে একটি মিউজিয়াম ছাড়া আর কিছু নেই। শুধু মাত্র স্থাপনাগুলো আছে। তবে এই জমিদার হাসন রাজারের স্থাপনাগুলো সরকারিভাবে সংগ্রহ করলে এখানে পর্যটন স্পট হতে পারে।

হাসন রাজার প্রপৌত্র ও হাসন রাজা পরিষদের চেয়ারম্যান সামারীন দেওয়ান বলেন,‘হাসন রাজা পরিবার তাকিয়ে থাকে প্রশাসনের দিকে আর প্রশাসন থাকিয়ে থাকে পরিবারের দিকে। এর জন্য স্থানীয় বা সরকারি পৃষ্টপোষকতায় পালিত হয় না হাসন রাজার জন্ম অথবা মৃত্যুবার্ষিকী। হাসন রাজার ১৬৫তম জন্মবার্ষিকী এবছর অনুষ্ঠান বিহীনভাবে চলছে। আমরা প্রতিবছর চেষ্ঠা করি হাসন রাজা পরিষদের উদ্দ্যেগে স্পনসর পাওয়া গেলে বড় আকারে সুনামগঞ্জের বালুর মাঠে অনুষ্ঠান করে থাকি। কিন্তু এবছর সেটা করা হচ্ছে না। আসলে হাসন রাজার বিষয়ে স্থানীয় বা সরকারি উদ্দ্যেগ একেবারেই নাই।

তিনি আরো বলেন,‘হাসন রাজার পরিবারের পক্ষ থেকে সুরমা নদীর তীঁর ঘেঁষে হাসন রাজার বাড়ীতে একটি দৃষ্টি নন্দন একটি মিউজিয়াম, একটি সংগ্রহ শালার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আমরা সরকারকে জানাবো আপনারা এগিয়ে আসুন আমরা হাসন রাজাকে বড় আকারে তুলে ধরি। সরকার এগিয়ে আসলে এই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িক হবে। অন্যথায়, এভাবে চলতে থাকলে হাসন রাজার মানুষের কাছ থেকে বিলুপ্তি হয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন,‘গত কিছুদিন আগে পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের পরিকল্পনা সচিব ও পর্যটন চেয়ারম্যান স্যার হাসন রাজার বাড়ী পরিদর্শন করে গেছেন। এসময় হাসন রাজার পরিবারকে বলা হয়েছে হাসন রাজাকে ধরে রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে একটি হাসন রাজা সংগ্রহশালা করা হবে। সংগ্রহশালায় হাসন রাজার জীবন কর্ম নিয়ে চর্চা করা যাবে। হাসন রাজার বাড়ী সংরক্ষণ করতে তাদেরকে বলা হয়েছে একটি প্রস্তাবনা পাঠানোর জন্য কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো প্রস্তাবনা আসে নি।

জন্ম-মৃত্যুবার্ষিকী পালন প্রসঙ্গে বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে শনিবার আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হবে। এর মধ্যে দিয়ে হাসন রাজাকে স্মরণ করা হবে।