ঢাকা , শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আপডেট :
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পূর্ব লন্ডনে বড়লেখার সোয়েব আহমেদের সমর্থনে মতবিনিময় সভা ইতালির ভেনিসে গ্রিন সিলেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এর জরুরি সভা অনুষ্ঠিত ইতালির ভেনিসে এনটিভির ইউরোপের ডিরেক্টর সাবরিনা হোসাইন কে সংবর্ধনা দিয়েছে ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাব পর্তুগালে বেজা আওয়ামীলীগের কর্মি সভা পর্তুগাল এ ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট ক্লাবের জার্সি উন্মোচন লিসবনে আত্মপ্রকাশ হয় সামাজিক সংগঠন “গোলাপগঞ্জ কমিউনিটি কেয়ারর্স পর্তুগাল “ উচ্ছ্বাস আর আনন্দে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখের উদযাপন করেছে পর্তুগাল যথাযথ গাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে পরিবেশে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর পালন করেছে ভেনিস প্রবাসীরা ভেনিসে বৃহত্তর সিলেট সমিতির আয়োজনে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত এক অসুস্থ প্রজন্ম কে সাথি করে এগুচ্ছি আমরা

খালেদা জিয়া এখন আর চেয়ারে বসে থাকার মতো সুস্থও নন

দেশদিগন্ত নিউজ ডেস্কঃ
  • আপডেটের সময় : ১১:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ মার্চ ২০১৯
  • / ৯৭১ টাইম ভিউ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। তার চিকিৎসা হচ্ছে না। গতকাল সকালে তার বমি হয়েছে, তিনি খেতে পারছেন না। তার সারা শরীরে অসহ্য ব্যথা। তারপরও তাকে জোর করে আদালতে আনা হয়েছে বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন।
মঙ্গলবার বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা নাইকো মামলায় খালেদা জিয়াকে হুইল চেয়ারে করে হাজির করা হয়। হুইল চেয়ারে বসা অবস্থায় তার পা কোমর পর্যন্ত সাদা কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। শুনানি শেষে বেলা ১টা ১৫ মিনিটের দিকে আবারো কারাগারে নেয়া হয় তাকে। শুনানি শুরু হওয়ার আগে মির্জা ফখরুল কারা আদালতে উপস্থিত হন। আদালতের কার্যক্রমের পুরো সময় তিনি খালেদা জিয়ার পাশে বসে ছিলেন এবং তার সাথে কথা বলেন। এ সময় খালেদা জিয়া তার গুরুতর অসুস্থতার কথা ও জোর করে তাকে আদালতে আনা হয়েছে বলে মির্জা ফখরুলকে জানিয়েছেন।

আদালতের কার্যক্রম শেষে বেলা সোয়া ১টায় খালেদা জিয়াকে আবার কারাগারে নেয়া হয়। এরপর আদালত থেকে বেরিয়ে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) বলেছেন তিনি অত্যন্ত অসুস্থ এবং তার চিকিৎসা হচ্ছে না। পায়ে ও হাঁটুসহ সারা শরীরে অসহ্য ব্যথা। ব্যথার কারণে তিনি হাত পা নাড়াতে পারছেন না। আদালতেও তিনি মাথা সোজা করে বসে থাকতে পারেননি। তার মাথা ঝুঁকে পড়ে যেতে দেখেছি। আপনারাও দেখেছেন। তাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে তিনি খুবই অসুস্থ। তিনি ঘাড়টাও চেয়ারের সাথে সোজা রেখে বসতে পারছেন না।
মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) বলেছেন পিজিতে তার কোনো চিকিৎসা হয় না। আমরা বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে তার চিকিৎসার কথা বলেছি। সে বিষয়ে সরকার এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তারা মেডিক্যাল বোর্ডের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার পাঠাতে পারে। রক্ত পরীক্ষা করতে পারে। সেটি করছে না। আমরা সরকারের কাছে চাচ্ছি, তিনিও (খালেদা জিয়া) চাচ্ছেন দ্রুত তার রক্ত পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা হোক। এবং তার যে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, তিনি পিজি হাসপাতালেরই ডাক্তার, তাকে দিয়ে চিকিৎসা করানো হোক, তাকে দেখানো হোক।

অন্য দিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার আদালত থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা উপস্থিত সবাই তাকে দেখেছেন। আদালতে আনার মতো শারীরিক অবস্থা তার ছিল কি না। তার পরও আমরা দেখলাম তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। অথচ তার চিকিৎসার ব্যাপারে মেডিক্যাল বোর্ড সুপারিশ করার পরও সরকার চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে জোর করে তাকে আদালতে হাজির করা হচ্ছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া নিজেই বলেছেন, তিনি এতটাই অসুস্থ যে তিনি বসে থাকতে পারছেন না।
মাসুদ আহমেদ তালুকদার আরো বলেন, সোমবার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্যাটকো মামলা ছিল, ডাক্তার লিখে দিয়েছেন খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ। আদালতে পাঠানো হাজিরা পরোয়ানায় লেখা হয়েছে তিনি অসুস্থ, তাকে আদালতে হাজির করা সঠিক হবে না। এর একদিন পর গতকাল খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। সোমবার ডাক্তার বলেছেন তিনি ফিজিকালি ফিট নন। একদিনের মাথায় তাকে আদালতে নিয়ে এলো। আপনারা সাংবাদিকেরা তাকে আদালতে দেখেছেন, আপনাদের কাছে কি তাকে সুস্থ মনে হয়েছে? এটা তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে। তিনিও বলে গেছেন, চিকিৎসা না দিয়ে জোর করে তাকে বিচারকের সামনে হাজির করা হচ্ছে দিনের পর দিন।

তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অসুস্থ হওয়ার পর ওই হাসপাতালে ছিলেন। তাকে কিন্তু সিঙ্গাপুরে নিয়ে গেছে। তার মানে তার চিকিৎসার যদি উপযুক্ত জায়গা হতো তাহলে তাকে কেন সিঙ্গাপুরে নেয়া হলো? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রোভিসি অসুস্থ, হার্টের সমস্যা। দুই দিন আগে তাকে প্রধানমন্ত্রী ইউনাইটেড হাসপাতালে দেখতে গেলেন। ইউনাইটেড হাসপাতালে সবার জন্য বৈধ হচ্ছে অথচ বেগম খালেদা জিয়ার জন্য কেন অবৈধ হচ্ছে আমরা তা বুঝতে পারছি না। তার হার্টসহ নানা রকম সমস্যা রয়েছে। মেডিক্যাল বোর্ড নানা রকম সমস্যার কথা বলেছে। তিনি জেলখানায় দুইবার অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছেন।

তিনি বলেন, আমরা বারবার বলেছি, নাইকো মামলার যে কাগজপত্রগুলো জব্দ করা হয়েছে তা আমাদের দেয়া হোক। কারণ এর মধ্যে কোনো গোঁজা মিল না থাকলে আমাদের দিতে আপত্তি করার কোনো কারণ নেই রাষ্ট্রপক্ষের। যা হোক আগামী ১ এপ্রিল এ মামলার অভিযোগ গঠনের বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে।

পোস্ট শেয়ার করুন

খালেদা জিয়া এখন আর চেয়ারে বসে থাকার মতো সুস্থও নন

আপডেটের সময় : ১১:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ মার্চ ২০১৯

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। তার চিকিৎসা হচ্ছে না। গতকাল সকালে তার বমি হয়েছে, তিনি খেতে পারছেন না। তার সারা শরীরে অসহ্য ব্যথা। তারপরও তাকে জোর করে আদালতে আনা হয়েছে বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন।
মঙ্গলবার বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা নাইকো মামলায় খালেদা জিয়াকে হুইল চেয়ারে করে হাজির করা হয়। হুইল চেয়ারে বসা অবস্থায় তার পা কোমর পর্যন্ত সাদা কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। শুনানি শেষে বেলা ১টা ১৫ মিনিটের দিকে আবারো কারাগারে নেয়া হয় তাকে। শুনানি শুরু হওয়ার আগে মির্জা ফখরুল কারা আদালতে উপস্থিত হন। আদালতের কার্যক্রমের পুরো সময় তিনি খালেদা জিয়ার পাশে বসে ছিলেন এবং তার সাথে কথা বলেন। এ সময় খালেদা জিয়া তার গুরুতর অসুস্থতার কথা ও জোর করে তাকে আদালতে আনা হয়েছে বলে মির্জা ফখরুলকে জানিয়েছেন।

আদালতের কার্যক্রম শেষে বেলা সোয়া ১টায় খালেদা জিয়াকে আবার কারাগারে নেয়া হয়। এরপর আদালত থেকে বেরিয়ে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) বলেছেন তিনি অত্যন্ত অসুস্থ এবং তার চিকিৎসা হচ্ছে না। পায়ে ও হাঁটুসহ সারা শরীরে অসহ্য ব্যথা। ব্যথার কারণে তিনি হাত পা নাড়াতে পারছেন না। আদালতেও তিনি মাথা সোজা করে বসে থাকতে পারেননি। তার মাথা ঝুঁকে পড়ে যেতে দেখেছি। আপনারাও দেখেছেন। তাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে তিনি খুবই অসুস্থ। তিনি ঘাড়টাও চেয়ারের সাথে সোজা রেখে বসতে পারছেন না।
মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) বলেছেন পিজিতে তার কোনো চিকিৎসা হয় না। আমরা বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে তার চিকিৎসার কথা বলেছি। সে বিষয়ে সরকার এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তারা মেডিক্যাল বোর্ডের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার পাঠাতে পারে। রক্ত পরীক্ষা করতে পারে। সেটি করছে না। আমরা সরকারের কাছে চাচ্ছি, তিনিও (খালেদা জিয়া) চাচ্ছেন দ্রুত তার রক্ত পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা হোক। এবং তার যে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, তিনি পিজি হাসপাতালেরই ডাক্তার, তাকে দিয়ে চিকিৎসা করানো হোক, তাকে দেখানো হোক।

অন্য দিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার আদালত থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা উপস্থিত সবাই তাকে দেখেছেন। আদালতে আনার মতো শারীরিক অবস্থা তার ছিল কি না। তার পরও আমরা দেখলাম তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। অথচ তার চিকিৎসার ব্যাপারে মেডিক্যাল বোর্ড সুপারিশ করার পরও সরকার চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে জোর করে তাকে আদালতে হাজির করা হচ্ছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া নিজেই বলেছেন, তিনি এতটাই অসুস্থ যে তিনি বসে থাকতে পারছেন না।
মাসুদ আহমেদ তালুকদার আরো বলেন, সোমবার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্যাটকো মামলা ছিল, ডাক্তার লিখে দিয়েছেন খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ। আদালতে পাঠানো হাজিরা পরোয়ানায় লেখা হয়েছে তিনি অসুস্থ, তাকে আদালতে হাজির করা সঠিক হবে না। এর একদিন পর গতকাল খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। সোমবার ডাক্তার বলেছেন তিনি ফিজিকালি ফিট নন। একদিনের মাথায় তাকে আদালতে নিয়ে এলো। আপনারা সাংবাদিকেরা তাকে আদালতে দেখেছেন, আপনাদের কাছে কি তাকে সুস্থ মনে হয়েছে? এটা তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে। তিনিও বলে গেছেন, চিকিৎসা না দিয়ে জোর করে তাকে বিচারকের সামনে হাজির করা হচ্ছে দিনের পর দিন।

তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অসুস্থ হওয়ার পর ওই হাসপাতালে ছিলেন। তাকে কিন্তু সিঙ্গাপুরে নিয়ে গেছে। তার মানে তার চিকিৎসার যদি উপযুক্ত জায়গা হতো তাহলে তাকে কেন সিঙ্গাপুরে নেয়া হলো? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রোভিসি অসুস্থ, হার্টের সমস্যা। দুই দিন আগে তাকে প্রধানমন্ত্রী ইউনাইটেড হাসপাতালে দেখতে গেলেন। ইউনাইটেড হাসপাতালে সবার জন্য বৈধ হচ্ছে অথচ বেগম খালেদা জিয়ার জন্য কেন অবৈধ হচ্ছে আমরা তা বুঝতে পারছি না। তার হার্টসহ নানা রকম সমস্যা রয়েছে। মেডিক্যাল বোর্ড নানা রকম সমস্যার কথা বলেছে। তিনি জেলখানায় দুইবার অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছেন।

তিনি বলেন, আমরা বারবার বলেছি, নাইকো মামলার যে কাগজপত্রগুলো জব্দ করা হয়েছে তা আমাদের দেয়া হোক। কারণ এর মধ্যে কোনো গোঁজা মিল না থাকলে আমাদের দিতে আপত্তি করার কোনো কারণ নেই রাষ্ট্রপক্ষের। যা হোক আগামী ১ এপ্রিল এ মামলার অভিযোগ গঠনের বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে।